ঢাকা ১২:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আবারো রণক্ষেত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

অনলাইন রিপোর্টঃ হামলা ও পাল্টা হামলাকে ছাত্রলীগ বলছে ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল  আর ছাত্রদল বলছে ছাত্রলীগের নৃসংস হামলা! ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে আধিপত্য ধরে রাখতে সকল ছাত্র সংগঠন তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি সম্পর্কে অবগত করতে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।এতে সংগঠনের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ছাত্রদল।
ছাত্রদলের অভিযোগ, উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তবে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপাতি সনজিত চন্দ্র দাস এই হামলার ঘটনাকে ছাত্রদলের অন্তর্দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বিকাল ৪টার কিছুক্ষণ পরে নীলক্ষেত মোড়ে জড়ো হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে স্যার এএফ রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুনের নেতৃত্বে হল ছাত্রলীগের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলা করে। হামলায় ছাত্রদলের প্রায় দশজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন- ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন শাওন, রাজু আহমেদ, ফারহান, আরিফ, শামিম আক্তার শুভ, নাজমুস সাকিব, মুন্সী সোহাগ এবং মুহসিন হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নয়ন।
আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ আশেপাশের হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী নিশ্চিত করেছেন।
হামলার বিষয়ে ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা করে। এতে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তারা ঢাকা মেডিকেল ও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
হামলার বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘ছাত্রদলের ওপর হামলাকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী নয়। তাদের মধ্যে ছয়টি গ্রুপ আছে। তারা যখন স্মারকলিপি প্রদান করতে আসছিল তখন তাদেরই একটা গ্রুপ ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা করে। তাদের উদ্দেশ্য ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করা।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের অতিথি হিসেবে মনে করি না। আমরা তাদের অভিভাবক হিসেবে আমাদের সন্তানের মতো দেখাশোনা করি। সব ছাত্রসংগঠনগুলো আমাদের কাছে সমান। ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে পড়াশোনার পাশাপাশি মূল্যবোধ গড়ে উঠুক আমরা চাই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে সেই শিক্ষা দেই।’
এর আগে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন দাবি নিয়ে ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে বের হয়ে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। ভিসি চত্বরে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, মুহসিন হল, কবি জসিমউদদীন হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং বাকি হলগুলোর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা টিএসসির দিকে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এছাড়াও বিকাল ৩টার আগে থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মহড়া দিতে দেখা যায়। তবে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে আলোচনা করে জানা যায় বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাচ্ছিলেন তাদের অনেকের হাতে গজারি লাঠি এবং লাঠিতে জাতীয় পতাকা বাধা ছিল। শিক্ষাঙ্গনে পড়ালেখার বিঘ্ন ঘটে এমন অস্থিতিশীল পরিবেশ কোন সময় কাম্য নয় বলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মত প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এই প্রতিনিধির কাছে।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

আবারো রণক্ষেত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

প্রকাশিত : ০২:৩১:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
অনলাইন রিপোর্টঃ হামলা ও পাল্টা হামলাকে ছাত্রলীগ বলছে ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল  আর ছাত্রদল বলছে ছাত্রলীগের নৃসংস হামলা! ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে আধিপত্য ধরে রাখতে সকল ছাত্র সংগঠন তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি সম্পর্কে অবগত করতে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।এতে সংগঠনের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ছাত্রদল।
ছাত্রদলের অভিযোগ, উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তবে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপাতি সনজিত চন্দ্র দাস এই হামলার ঘটনাকে ছাত্রদলের অন্তর্দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বিকাল ৪টার কিছুক্ষণ পরে নীলক্ষেত মোড়ে জড়ো হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে স্যার এএফ রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুনের নেতৃত্বে হল ছাত্রলীগের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলা করে। হামলায় ছাত্রদলের প্রায় দশজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন- ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন শাওন, রাজু আহমেদ, ফারহান, আরিফ, শামিম আক্তার শুভ, নাজমুস সাকিব, মুন্সী সোহাগ এবং মুহসিন হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নয়ন।
আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ আশেপাশের হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী নিশ্চিত করেছেন।
হামলার বিষয়ে ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা করে। এতে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তারা ঢাকা মেডিকেল ও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
হামলার বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘ছাত্রদলের ওপর হামলাকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী নয়। তাদের মধ্যে ছয়টি গ্রুপ আছে। তারা যখন স্মারকলিপি প্রদান করতে আসছিল তখন তাদেরই একটা গ্রুপ ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা করে। তাদের উদ্দেশ্য ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করা।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের অতিথি হিসেবে মনে করি না। আমরা তাদের অভিভাবক হিসেবে আমাদের সন্তানের মতো দেখাশোনা করি। সব ছাত্রসংগঠনগুলো আমাদের কাছে সমান। ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে পড়াশোনার পাশাপাশি মূল্যবোধ গড়ে উঠুক আমরা চাই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে সেই শিক্ষা দেই।’
এর আগে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন দাবি নিয়ে ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে বের হয়ে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। ভিসি চত্বরে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, মুহসিন হল, কবি জসিমউদদীন হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং বাকি হলগুলোর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা টিএসসির দিকে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এছাড়াও বিকাল ৩টার আগে থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মহড়া দিতে দেখা যায়। তবে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে আলোচনা করে জানা যায় বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাচ্ছিলেন তাদের অনেকের হাতে গজারি লাঠি এবং লাঠিতে জাতীয় পতাকা বাধা ছিল। শিক্ষাঙ্গনে পড়ালেখার বিঘ্ন ঘটে এমন অস্থিতিশীল পরিবেশ কোন সময় কাম্য নয় বলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মত প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এই প্রতিনিধির কাছে।