ঢাকা ১১:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সশস্ত্র বাহিনীকে উপযুক্ত করে তৈরি করছি: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্ট॥
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে যুগোপযোগী ও আধুনিকভাবে তৈরি করতে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।রোববার (৩০ অক্টোবর) বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অ্যাভিয়েশন বহরে দুটি মেরিটাইম প্যাট্রল এয়ারক্রাফট এমপিএ-৮৩২২ ও এমপিএ-৮৩২৭ সংযোজন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নেভাল অ্যাভিয়েশন হ্যাঙ্গারের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিটি বাহিনীকে সক্ষম করে গড়ে তুলছে।তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, যুদ্ধ চাইনা। বহিঃশক্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষায় আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে, যাতে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সবসময় ধরে রাখতে পারি।  সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে (বাহিনীকে) উপযুক্ত করে তৈরি করছি ।’
সুশৃঙ্খল সশস্ত্রবাহিনী দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বিপুলভাবে প্রশংসিত পেশাদার একটি বাহিনী হিসেবে কাজ করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১০ সাল থেকে ভূমধ্যসাগরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে আমাদের যুদ্ধ জাহাজ সার্বক্ষণিকভাবে অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া দক্ষিণ সুদানেও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে।
শান্তিরক্ষা মিশন ছাড়াও এ বাহিনী নিয়মিতভাবে বহু জাতীয় এক্সারসাইজ, বঙ্গোপসাগরে কোয়ার্ডিনেটেড পেট্রল ও কুটনৈতিক সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের মেরিটাইম সিকিউরিটিকে সুসংহত করে চলেছে। আমি এ কর্মমুখর নৌবাহিনীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
শেখ হাসিনা বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অথনৈতিক ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং দেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’।
আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। কিন্তু করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমাদের উন্নয়নের গতিটা কিছুটা শ্লথ হয়ে গেছে।তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী উন্নত দেশগুলোও এখন হিমশিম খাচ্ছে। সেই অবস্থার মধ্য দিয়ে আমাদের চলতে হচ্ছে। তবে আমরা আমাদের নিজেদের সম্পদ এবং  মাটি ও মানুষ দিয়েই এই দেশকে সুরক্ষিত রাখবো, যার যেখানে যতটুকু সুযোগ আছে আমাদের খাদ্য উৎপানে মনেযোগী হতে হবে।‘সেই সাথে আমি এটুকু বলবো আমরা যে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি সেখানে আন্তর্জাতিক মন্দার কিছুটা প্রভাব আমাদের ওপর পড়েছে। কিন্তু আমাদের চেষ্টা থাকতে হবে এর থেকে যেন আমরা মুক্ত থাকতে পারি এবং সমুদ্র সম্পদ কিভাবে অর্থনৈতিক কাজে আমরা ব্যবহার করতে পারি। ব্লু ইকোনমি’র মাধ্যমেই আমরা সেটা চালু করতে পারি এবং সেদিকেই আমাদেও বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।”তিনি নৌবাহিনীর নতুন এই অভিযাত্রাতে আনন্দ প্রকাশ করেন।অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রীকে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
৯৭ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ঘুর্ণিদুর্গতদের জন্য ব্যারাক হাউজ করে দেওয়ার মাধ্যমে তার সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের শুরু হয় উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, যে কোন দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আমাদের নৌবাহিনী মানুষের পাশে থাকে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যেকোনো ঝড় জলোচ্ছাস মোকাবিলায় তারা পাশে থাকে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী নৌবাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।তিনি বলেন, দেশে ব্লু-ইকোনমি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা হয়েছে। এসব কার্যক্রমের নিরাপত্তা ও নজরদারিতে নৌবাহিনীর এমপিএসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে পুনরায় সরকার গঠনের পর থেকে আমরা জাতির পিতার প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করে এর বাস্তবায়ন শুরু করি। বর্তমান সরকারের দূরদর্শী পরিকল্পনা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট এবং সাবমেরিনসহ আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০১৭ সালে নৌ-বহরে ‘বানৌজা নবযাত্রা’ ও ‘বানৌজা জয়যাত্রা’ সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি সত্যিকারের পূর্ণাঙ্গ ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি।
গভীর সমুদ্রে নজরদারি, উদ্ধার অভিযান ও অন্যান্য অপারেশনাল কার্যক্রমে এমপিএ এর কার্যকারিতা অপরিসীম উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, এরই ফলশ্রুতিতে ২০১৩ সালে পর্যায়ক্রমে দুটি অত্যাধুনিক ডর্নিয়ার ২২৮এনজি মেরিটাইম প্রেট্রল এয়ারক্রাফট বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়। সূচনালগ্ন থেকে সুবিশাল এই সমুদ্রসীমা নজরদারির কাজ বাংলাদেশ নেভাল এভিয়েশানের এমপিএ স্কোয়াড্রন সর্বোচ্চ দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে পালন করে আসছে। সমুদ্রসীমায় নজরদারি বৃদ্ধির গুরুত্ব অনুধাবন করে ২০১৭ সালে বর্তমান সরকার অতিরিক্ত দুইটি এমপিএ ক্রয়ের কার্যক্রম গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় নৌবহরে আজ সংযোজিত হলো আরও দুটি অত্যাধুনিক ডর্নিয়ার ২২৮এনজি মেরিটাইম প্রেট্রল এয়ারক্রাফট।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড ইতোমধ্যে প্যাট্রোল ক্রাফট ও লার্জ প্যাট্রোল ক্রাফট নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন করেছে, যা দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। এছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেডে আধুনিক যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ‘নির্মাতা নৌবাহিনী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও আশা করেন তিনি।
স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমেই আমাদের নৌবাহিনীর যাত্রা শুরু উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে নৌবাহিনীর সাহসী সদস্যদের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিচালিত ‘অপারেশন জ্যাকপট’ এর কথাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি একে আমাদের নৌযুদ্ধের ইতিহাসের ‘এক অনন্য বীরত্বগাঁথা’ বলেও উল্লেখ করেন। পাশাপাশি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে জাতির পিতার উদ্যোগের পাশাপাশি নৌবাহিনী পুনর্গঠন এবং বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা চিহ্নিতকরণে তার প্রশংসনীয় পদক্ষেপসমূহের উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ইতোমধ্যে, এমপিএ ও হেলিকপ্টার পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আধুনিক সব সুবিধা সম্বলিত বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বেশকিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

সশস্ত্র বাহিনীকে উপযুক্ত করে তৈরি করছি: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৫:৩২:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২২
অনলাইন রিপোর্ট॥
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে যুগোপযোগী ও আধুনিকভাবে তৈরি করতে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।রোববার (৩০ অক্টোবর) বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অ্যাভিয়েশন বহরে দুটি মেরিটাইম প্যাট্রল এয়ারক্রাফট এমপিএ-৮৩২২ ও এমপিএ-৮৩২৭ সংযোজন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নেভাল অ্যাভিয়েশন হ্যাঙ্গারের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিটি বাহিনীকে সক্ষম করে গড়ে তুলছে।তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, যুদ্ধ চাইনা। বহিঃশক্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষায় আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে, যাতে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সবসময় ধরে রাখতে পারি।  সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে (বাহিনীকে) উপযুক্ত করে তৈরি করছি ।’
সুশৃঙ্খল সশস্ত্রবাহিনী দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বিপুলভাবে প্রশংসিত পেশাদার একটি বাহিনী হিসেবে কাজ করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১০ সাল থেকে ভূমধ্যসাগরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে আমাদের যুদ্ধ জাহাজ সার্বক্ষণিকভাবে অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া দক্ষিণ সুদানেও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে।
শান্তিরক্ষা মিশন ছাড়াও এ বাহিনী নিয়মিতভাবে বহু জাতীয় এক্সারসাইজ, বঙ্গোপসাগরে কোয়ার্ডিনেটেড পেট্রল ও কুটনৈতিক সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের মেরিটাইম সিকিউরিটিকে সুসংহত করে চলেছে। আমি এ কর্মমুখর নৌবাহিনীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
শেখ হাসিনা বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অথনৈতিক ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং দেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’।
আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। কিন্তু করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমাদের উন্নয়নের গতিটা কিছুটা শ্লথ হয়ে গেছে।তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী উন্নত দেশগুলোও এখন হিমশিম খাচ্ছে। সেই অবস্থার মধ্য দিয়ে আমাদের চলতে হচ্ছে। তবে আমরা আমাদের নিজেদের সম্পদ এবং  মাটি ও মানুষ দিয়েই এই দেশকে সুরক্ষিত রাখবো, যার যেখানে যতটুকু সুযোগ আছে আমাদের খাদ্য উৎপানে মনেযোগী হতে হবে।‘সেই সাথে আমি এটুকু বলবো আমরা যে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি সেখানে আন্তর্জাতিক মন্দার কিছুটা প্রভাব আমাদের ওপর পড়েছে। কিন্তু আমাদের চেষ্টা থাকতে হবে এর থেকে যেন আমরা মুক্ত থাকতে পারি এবং সমুদ্র সম্পদ কিভাবে অর্থনৈতিক কাজে আমরা ব্যবহার করতে পারি। ব্লু ইকোনমি’র মাধ্যমেই আমরা সেটা চালু করতে পারি এবং সেদিকেই আমাদেও বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।”তিনি নৌবাহিনীর নতুন এই অভিযাত্রাতে আনন্দ প্রকাশ করেন।অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রীকে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
৯৭ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ঘুর্ণিদুর্গতদের জন্য ব্যারাক হাউজ করে দেওয়ার মাধ্যমে তার সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের শুরু হয় উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, যে কোন দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আমাদের নৌবাহিনী মানুষের পাশে থাকে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যেকোনো ঝড় জলোচ্ছাস মোকাবিলায় তারা পাশে থাকে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী নৌবাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।তিনি বলেন, দেশে ব্লু-ইকোনমি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা হয়েছে। এসব কার্যক্রমের নিরাপত্তা ও নজরদারিতে নৌবাহিনীর এমপিএসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে পুনরায় সরকার গঠনের পর থেকে আমরা জাতির পিতার প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করে এর বাস্তবায়ন শুরু করি। বর্তমান সরকারের দূরদর্শী পরিকল্পনা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট এবং সাবমেরিনসহ আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০১৭ সালে নৌ-বহরে ‘বানৌজা নবযাত্রা’ ও ‘বানৌজা জয়যাত্রা’ সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি সত্যিকারের পূর্ণাঙ্গ ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি।
গভীর সমুদ্রে নজরদারি, উদ্ধার অভিযান ও অন্যান্য অপারেশনাল কার্যক্রমে এমপিএ এর কার্যকারিতা অপরিসীম উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, এরই ফলশ্রুতিতে ২০১৩ সালে পর্যায়ক্রমে দুটি অত্যাধুনিক ডর্নিয়ার ২২৮এনজি মেরিটাইম প্রেট্রল এয়ারক্রাফট বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়। সূচনালগ্ন থেকে সুবিশাল এই সমুদ্রসীমা নজরদারির কাজ বাংলাদেশ নেভাল এভিয়েশানের এমপিএ স্কোয়াড্রন সর্বোচ্চ দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে পালন করে আসছে। সমুদ্রসীমায় নজরদারি বৃদ্ধির গুরুত্ব অনুধাবন করে ২০১৭ সালে বর্তমান সরকার অতিরিক্ত দুইটি এমপিএ ক্রয়ের কার্যক্রম গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় নৌবহরে আজ সংযোজিত হলো আরও দুটি অত্যাধুনিক ডর্নিয়ার ২২৮এনজি মেরিটাইম প্রেট্রল এয়ারক্রাফট।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড ইতোমধ্যে প্যাট্রোল ক্রাফট ও লার্জ প্যাট্রোল ক্রাফট নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন করেছে, যা দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। এছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেডে আধুনিক যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ‘নির্মাতা নৌবাহিনী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও আশা করেন তিনি।
স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমেই আমাদের নৌবাহিনীর যাত্রা শুরু উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে নৌবাহিনীর সাহসী সদস্যদের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিচালিত ‘অপারেশন জ্যাকপট’ এর কথাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি একে আমাদের নৌযুদ্ধের ইতিহাসের ‘এক অনন্য বীরত্বগাঁথা’ বলেও উল্লেখ করেন। পাশাপাশি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে জাতির পিতার উদ্যোগের পাশাপাশি নৌবাহিনী পুনর্গঠন এবং বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা চিহ্নিতকরণে তার প্রশংসনীয় পদক্ষেপসমূহের উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ইতোমধ্যে, এমপিএ ও হেলিকপ্টার পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আধুনিক সব সুবিধা সম্বলিত বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বেশকিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।