ঢাকা ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে কি ফাইনাল ম্যাচে

অনলাইন রিপোর্ট॥
শেষের পথে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। প্রথম রাউন্ড, সুপার টুয়েলভ ও সেমিফাইনালে ৪৪ ম্যাচের যাত্রা পেরিয়ে এবার ফাইনাল মহারণ দেখার অপেক্ষায় পুরো বিশ্ব। কি হতে চলেছে মেলবোর্নে- নতুন উপাখ্যান, নাকি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি? মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড সাক্ষী হতে চলেছেন কোন উৎসবের?
আজ (রোববার) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড (এমসিজি)তে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস ও গাজী  পাকিস্তানে সাত ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-২ এ পিছিয়ে থেকে ৪-৩ এ জিতেছিলো ইংলিশরা। নিশ্চিতভাবে ওই সিরিজ ফাইনালে লড়াইয়ে আত্মবিশ্বাস যোগাবে ইংল্যান্ড দলকে। নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের পেসাররা কঠিন পরীক্ষা নেবে, কিন্তু প্রস্তুত ‘অবিশ্বাস্যরকম বিপজ্জনক’ ইংল্যান্ড।
এই দুই প্রতিপক্ষ যখন মুখোমুখি হওয়ার সামনে দাঁড়িয়ে, উঁকি দিচ্ছে ১৯৯২ বিশ্বকাপের স্মৃতি। ওয়ানডে ফরম্যাটের সেই বিশ্বকাপে ফাইনালের ভেন্যুও ছিলো মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড (এমসিজি)। ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলো পাকিস্তান। ৩০ বছর আগের সেই অতীতের মতো এবারো অনেককিছু মিলে যাচ্ছে।
খাদের কিনারা থেকে সেবার পাকিস্তান সেমিফাইনাল ও ফাইনালে উঠেছিলো। লিগ পর্বে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৪ রানে অলআউট হওয়ার পরও নিশ্চিত হারের মুখ থেকে রক্ষা পেয়েছিলো। বৃষ্টির কারণে ম্যাচ হয় পণ্ড। রানরেটে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে ছিলো। কিন্তু পরিত্যক্ত ম্যাচ থেকে পাওয়া এক পয়েন্টের সুবাদে অজিদের টপকে কোনোমতে চারে থেকে সেমিতে গিয়েছিলো ইমরান খানের দল। সেমিতে নিউজিল্যান্ড ও ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে হয়েছিলো চ্যাম্পিয়ন।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও খাদের কিনারাতেই ছিলো পাকিস্তান। সুপার টুয়েলভে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ভারত ও জিম্বাবুয়ের কাছে হেরে দলটি বিদায়ঘণ্টা শুনতে পায়। পরের দুই ম্যাচে জিতলেও সম্ভাবনা কেবল কাগজে-কলমেই টিকে ছিলো। তখন অবিশ্বাস্য কাণ্ড ঘটিয়ে সুবিধা করে দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। শক্তিশালী সাউথ আফ্রিকাকে হারিয়ে তারা সব সমীকরণ পাল্টে দেয়। বিশ্বকাপ থেকে প্রোটিয়াদের বিদায় করে দেয়। পরে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ হয়ে ওঠে অঘোষিত কোয়ার্টার ফাইনাল।
ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান বিতর্কিতভাবে এলবিডব্লিউ হয়ে ক্রিজ ছাড়তে বাধ্য হন। এমন ঘটনায় ম্যাচটি আলোচিত ছিলো। নাজমুল হোসেন শান্তর ফিফটি, বাকিদের ব্যর্থ ও দৃষ্টিকটু পারফরম্যান্সে ডোবে টাইগাররা। ম্যাচ জিতে সেমিতে যায় পাকিস্তান।
ডাচদের বিপক্ষে হার তো বটেই, বিস্ময়করভাবে ১৯৯২ বিশ্বকাপের মতো আবারো সাউথ আফ্রিকার দুঃখের কারণ হয় বৃষ্টি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় একপর্যায়ে প্রোটিয়াদের জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৭ ওভারে ৬৪ রান। কুইন্টন ডি ককের ১৮ বলে ৪৭ রানের ঝড়ো ইনিংসে তারা ৩ ওভারে বিনা উইকেটে ৫১ রান তুলে ফেলেছিলো। পরে বৃষ্টির জন্য ন্যুনতম ৫ ওভার বল মাঠে না গড়ানোয় খেলাটি পরিত্যক্ত হয়। এমনটি না হলে পাকিস্তানের সমান ৬ পয়েন্ট তাদের থাকতো, সঙ্গে রানরেটেও এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। ১৯৯২’র মতো সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে পাকিস্তান বৃষ্টির সহায়তা পায়।
কাকতালীয় ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় শেষ চারেও। ১৯৯২’র বিশ্বকাপের মতো এবারো মুখোমুখি নিউজিল্যান্ড-পাকিস্তান। ফলাফলটাও যায় মিলে। কিউইদের হারিয়ে পাকিস্তান ফাইনালে পৌঁছে যায়। আরেক সেমিতে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে। তাতে ৩০ বছর আগের মতো সেই ইংল্যান্ডই হয়েছে ফাইনালের প্রতিপক্ষ।
অবশ্য কোনোভাবেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি চায় না ইংল্যান্ড। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে আসর শুরু করে দ্বিতীয় ম্যাচেই ছিলো হোঁচট। ইংলিশদের হারিয়ে রূপকথার জন্ম দেয় আয়ারল্যান্ড। পরে বৃষ্টিতে ম্যাচ পণ্ড হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ইংলিশদের করতে হয় পয়েন্ট ভাগাভাগি। শেষ দুই খেলায় নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সুপার টুয়েলভ পর্বে জশ বাটলারের দলের পয়েন্ট দাঁড়ায় ৭। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্টও ৭ করে ছিলো। আসে রানরেটের হিসাব। রানরেটে শক্ত অবস্থানে থাকায় নিউজিল্যান্ড গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও ইংল্যান্ড গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে সেমির টিকিট কাটে। শেষ চারের আগে বাদ পড়ে অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিক দেশ হিসেবে ১৯৯২ সালেও অজিরা সেমিতে খেলতে পারেনি। এবারো একই দৃশ্যের অবতারণা।
সেমিফাইনালে ভারতের দেয়া ১৬৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অ্যালেক্স হেলস ও অধিনায়ক জস বাটলার ২২ গজে সাইক্লোন তৈরি করেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ ১৭০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ইংল্যান্ডকে ১০ উইকেটে জিতিয়ে ফাইনালে তোলেন। টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি লড়াইয়ে এর আগে ইংল্যান্ড এবং পাকিস্তান ২৮টি ম্যাচে নেমেছে। ইংল্যান্ড ১৮টি জয় তুলেছে, পাকিস্তান জিতেছে ৯ ম্যাচে। একটি ম্যাচ হয় পরিত্যক্ত।
ইংল্যান্ড যে ১৮ ম্যাচে জিতেছে, এরমধ্যে ৭টি ছিলো ঘরের মাঠে, ৪টি পাকিস্তানের মাঠে ও বাকি ৭টি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। বিশ্বকাপের মঞ্চে দুইবারের দেখায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগে একবারো জিততে পারেনি পাকিস্তান। পাকিস্তানের অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রেকর্ড বেশ ভালো। প্রথম আসরে শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে হয়েছিলো রানার্সআপ। দ্বিতীয় আসরে হয় চ্যাম্পিয়ন। চারবার খেলেছে সেমিফাইনালে, ফাইনালে এই নিয়ে তিনবার।
প্রথম দুই আসরে গ্রুপপর্বে বাদ পড়া ইংল্যান্ড ২০১০ সালে তৃতীয় আসরে হয় চ্যাম্পিয়ন। পরের দুই বিশ্বকাপে আবারো গ্রুপপর্বেই তাদের বিদায় নিতে হয়। ২০১৬ বিশ্বকাপে শেষ ওভারে ক্যারিবীয়দের কাছে হেরে হয় রানার্সআপ। গত আসরে খেলেছিলো সেমিফাইনাল। প্রথম সেমির ভেন্যু মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এ দুইদল কখনোই ২০ ওভারের ক্রিকেটে মুখোমুখি হয়নি। পরিসংখ্যান বলছে, ১৬৯ বছরের ইতিহাস ধরে রাখা এমসিজিতে হয়েছে ২১টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে কি ফাইনাল ম্যাচে

প্রকাশিত : ১২:৪৯:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২
অনলাইন রিপোর্ট॥
শেষের পথে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। প্রথম রাউন্ড, সুপার টুয়েলভ ও সেমিফাইনালে ৪৪ ম্যাচের যাত্রা পেরিয়ে এবার ফাইনাল মহারণ দেখার অপেক্ষায় পুরো বিশ্ব। কি হতে চলেছে মেলবোর্নে- নতুন উপাখ্যান, নাকি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি? মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড সাক্ষী হতে চলেছেন কোন উৎসবের?
আজ (রোববার) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড (এমসিজি)তে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস ও গাজী  পাকিস্তানে সাত ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-২ এ পিছিয়ে থেকে ৪-৩ এ জিতেছিলো ইংলিশরা। নিশ্চিতভাবে ওই সিরিজ ফাইনালে লড়াইয়ে আত্মবিশ্বাস যোগাবে ইংল্যান্ড দলকে। নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের পেসাররা কঠিন পরীক্ষা নেবে, কিন্তু প্রস্তুত ‘অবিশ্বাস্যরকম বিপজ্জনক’ ইংল্যান্ড।
এই দুই প্রতিপক্ষ যখন মুখোমুখি হওয়ার সামনে দাঁড়িয়ে, উঁকি দিচ্ছে ১৯৯২ বিশ্বকাপের স্মৃতি। ওয়ানডে ফরম্যাটের সেই বিশ্বকাপে ফাইনালের ভেন্যুও ছিলো মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড (এমসিজি)। ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলো পাকিস্তান। ৩০ বছর আগের সেই অতীতের মতো এবারো অনেককিছু মিলে যাচ্ছে।
খাদের কিনারা থেকে সেবার পাকিস্তান সেমিফাইনাল ও ফাইনালে উঠেছিলো। লিগ পর্বে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৪ রানে অলআউট হওয়ার পরও নিশ্চিত হারের মুখ থেকে রক্ষা পেয়েছিলো। বৃষ্টির কারণে ম্যাচ হয় পণ্ড। রানরেটে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে ছিলো। কিন্তু পরিত্যক্ত ম্যাচ থেকে পাওয়া এক পয়েন্টের সুবাদে অজিদের টপকে কোনোমতে চারে থেকে সেমিতে গিয়েছিলো ইমরান খানের দল। সেমিতে নিউজিল্যান্ড ও ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে হয়েছিলো চ্যাম্পিয়ন।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও খাদের কিনারাতেই ছিলো পাকিস্তান। সুপার টুয়েলভে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ভারত ও জিম্বাবুয়ের কাছে হেরে দলটি বিদায়ঘণ্টা শুনতে পায়। পরের দুই ম্যাচে জিতলেও সম্ভাবনা কেবল কাগজে-কলমেই টিকে ছিলো। তখন অবিশ্বাস্য কাণ্ড ঘটিয়ে সুবিধা করে দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। শক্তিশালী সাউথ আফ্রিকাকে হারিয়ে তারা সব সমীকরণ পাল্টে দেয়। বিশ্বকাপ থেকে প্রোটিয়াদের বিদায় করে দেয়। পরে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ হয়ে ওঠে অঘোষিত কোয়ার্টার ফাইনাল।
ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান বিতর্কিতভাবে এলবিডব্লিউ হয়ে ক্রিজ ছাড়তে বাধ্য হন। এমন ঘটনায় ম্যাচটি আলোচিত ছিলো। নাজমুল হোসেন শান্তর ফিফটি, বাকিদের ব্যর্থ ও দৃষ্টিকটু পারফরম্যান্সে ডোবে টাইগাররা। ম্যাচ জিতে সেমিতে যায় পাকিস্তান।
ডাচদের বিপক্ষে হার তো বটেই, বিস্ময়করভাবে ১৯৯২ বিশ্বকাপের মতো আবারো সাউথ আফ্রিকার দুঃখের কারণ হয় বৃষ্টি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় একপর্যায়ে প্রোটিয়াদের জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৭ ওভারে ৬৪ রান। কুইন্টন ডি ককের ১৮ বলে ৪৭ রানের ঝড়ো ইনিংসে তারা ৩ ওভারে বিনা উইকেটে ৫১ রান তুলে ফেলেছিলো। পরে বৃষ্টির জন্য ন্যুনতম ৫ ওভার বল মাঠে না গড়ানোয় খেলাটি পরিত্যক্ত হয়। এমনটি না হলে পাকিস্তানের সমান ৬ পয়েন্ট তাদের থাকতো, সঙ্গে রানরেটেও এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। ১৯৯২’র মতো সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে পাকিস্তান বৃষ্টির সহায়তা পায়।
কাকতালীয় ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় শেষ চারেও। ১৯৯২’র বিশ্বকাপের মতো এবারো মুখোমুখি নিউজিল্যান্ড-পাকিস্তান। ফলাফলটাও যায় মিলে। কিউইদের হারিয়ে পাকিস্তান ফাইনালে পৌঁছে যায়। আরেক সেমিতে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে। তাতে ৩০ বছর আগের মতো সেই ইংল্যান্ডই হয়েছে ফাইনালের প্রতিপক্ষ।
অবশ্য কোনোভাবেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি চায় না ইংল্যান্ড। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে আসর শুরু করে দ্বিতীয় ম্যাচেই ছিলো হোঁচট। ইংলিশদের হারিয়ে রূপকথার জন্ম দেয় আয়ারল্যান্ড। পরে বৃষ্টিতে ম্যাচ পণ্ড হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ইংলিশদের করতে হয় পয়েন্ট ভাগাভাগি। শেষ দুই খেলায় নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সুপার টুয়েলভ পর্বে জশ বাটলারের দলের পয়েন্ট দাঁড়ায় ৭। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্টও ৭ করে ছিলো। আসে রানরেটের হিসাব। রানরেটে শক্ত অবস্থানে থাকায় নিউজিল্যান্ড গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও ইংল্যান্ড গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে সেমির টিকিট কাটে। শেষ চারের আগে বাদ পড়ে অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিক দেশ হিসেবে ১৯৯২ সালেও অজিরা সেমিতে খেলতে পারেনি। এবারো একই দৃশ্যের অবতারণা।
সেমিফাইনালে ভারতের দেয়া ১৬৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অ্যালেক্স হেলস ও অধিনায়ক জস বাটলার ২২ গজে সাইক্লোন তৈরি করেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ ১৭০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ইংল্যান্ডকে ১০ উইকেটে জিতিয়ে ফাইনালে তোলেন। টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি লড়াইয়ে এর আগে ইংল্যান্ড এবং পাকিস্তান ২৮টি ম্যাচে নেমেছে। ইংল্যান্ড ১৮টি জয় তুলেছে, পাকিস্তান জিতেছে ৯ ম্যাচে। একটি ম্যাচ হয় পরিত্যক্ত।
ইংল্যান্ড যে ১৮ ম্যাচে জিতেছে, এরমধ্যে ৭টি ছিলো ঘরের মাঠে, ৪টি পাকিস্তানের মাঠে ও বাকি ৭টি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। বিশ্বকাপের মঞ্চে দুইবারের দেখায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগে একবারো জিততে পারেনি পাকিস্তান। পাকিস্তানের অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রেকর্ড বেশ ভালো। প্রথম আসরে শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে হয়েছিলো রানার্সআপ। দ্বিতীয় আসরে হয় চ্যাম্পিয়ন। চারবার খেলেছে সেমিফাইনালে, ফাইনালে এই নিয়ে তিনবার।
প্রথম দুই আসরে গ্রুপপর্বে বাদ পড়া ইংল্যান্ড ২০১০ সালে তৃতীয় আসরে হয় চ্যাম্পিয়ন। পরের দুই বিশ্বকাপে আবারো গ্রুপপর্বেই তাদের বিদায় নিতে হয়। ২০১৬ বিশ্বকাপে শেষ ওভারে ক্যারিবীয়দের কাছে হেরে হয় রানার্সআপ। গত আসরে খেলেছিলো সেমিফাইনাল। প্রথম সেমির ভেন্যু মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এ দুইদল কখনোই ২০ ওভারের ক্রিকেটে মুখোমুখি হয়নি। পরিসংখ্যান বলছে, ১৬৯ বছরের ইতিহাস ধরে রাখা এমসিজিতে হয়েছে ২১টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি।