অনলাইন রিপোর্ট॥
আজ ( ১৫ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগের ৩তম জাতীয় সম্মেলন। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার।
দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে যুব মহিলা লীগ সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন নাজমা আক্তার ও অপু উকিল। অবশেষে তাদের নেতৃত্বের জট ভাঙতে যাচ্ছে। এই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব পাবে যুব মহিলা লীগ।
এদিকে সন্মেলনকে কেন্দ্র করে সংগঠনটির শীর্ষ দুই পদ ও কমিটিতে স্থান পেতে শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নেত্রীরা। অনেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের বাসা ও অফিসে গিয়ে সাক্ষাৎ করেছে নেত্রীরা। এমনকি বেশ কয়েকজন রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয় এবং গুলিস্থানে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন।
দলীয় সূত্র বলছে, যুব মহিলা লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যর্থতা নিয়ে আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ে আলোচনা চলছে। পাপিয়াকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর আওয়ামী লীগ এবং এবং যুব মহিলা লীগ বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিল। বিশেষ করে পাপিয়ার সঙ্গে সরকার এবং ক্ষমতাসীন দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং মন্ত্রীদের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হওয়ার পর দলে বিরাট অস্বস্তি তৈরি হয়। এমন বাস্তবতায় সংগঠনের বর্তমান সভাপতি নাজমা আক্তার ও অপু উকিলকে বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে যুব মহিলা লীগকে ঢেলে সাজানো হবে বলে প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের। সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল সভাপতি পদের জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
দলীয় সূত্র বলছে, এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। সংগঠনটি গুরুত্বপূর্ণ দুইটি পদসহ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকে পদেও পরিবর্তন আসতে পারে। নেতৃত্বে আসতে পারেন সংগঠন নতুন-পুরনো এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রীদের কেউ কেই।
যুব মহিলা লীগকে বির্তক মুক্ত করে এগিয়ে নিতে এবার সংগঠনের বাইরে থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। এ নিয়ে কিছু দিন ধরে দলের মধ্যে বেশ আলোচনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একটি সূত্রে জানা গেছে, যুব মহিলা লীগের সভাপতি হতে পারেন ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বোন। এছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেত্রীর নামও আছে আলোচনায়।
যুব মহিলা লীগের অভ্যন্তরীণ সূত্র মতে, যুব মহিলা লীগের গঠনতন্ত্রে কোনো বয়সসীমা উল্লেখ নেই। তারপরও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। অনেকের আক্ষেপও রয়েছে। বর্তমান সভাপতি নাজমা আক্তারের বয়স ৫৫ বছর। সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলের বয়স ৫০। এছাড়া অন্যান্য পদেও পঞ্চাশোর্ধ ও পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই নেত্রীরা রয়েছেন। বয়সের বিষয়টিও এবার বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে।
যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, ‘নেত্রী আমাকে সংগঠনের স্বার্থে যেখানে কাজে লাগাবেন সেখানে থেকেই কাজ করবো।’ সহ-সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজি ঢাকা টাইমসেকে বলেন, ‘দলের জন্য সবসময় কাজ করেছি ভবিষ্যতেও করবো। আমি এবার সভাপতি প্রার্থী। নেত্রী যদি দায়িত্ব দেন তাহলে পালন করবো।’
আরেক সহ-সভাপতি কোহলী কুদ্দুস মুক্তি ঢাকা টাইমসেকে বলেন, ‘এবারের সম্মেলন থেকে নতুন-পুরনো মিলিয়ে ভালো একটি কমিটি আসুক, এটাই প্রত্যাশা। যারা মাঠের রাজনীতি করেন, সক্রিয় ও ত্যাগী তাদের মূল্যায়ন হবে বলেই মনে করি।’
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন, বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি কোহলী কুদ্দুস মুক্তি, আলেয়া সারোয়ার ডেইজি ও আফরোজা মনসুর লিপি, রাজিয়া পারভীন লাকি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুন্নাহার রত্না, শাহনাজ পারভীন ডলি, শারমীন আক্তার নিপা, হেনা লাভলী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি ও মাহফুজা রিনাও সালমা ভূইয়া চায়না
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১১ মার্চ যুব মহিলা লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে নাজমা আক্তারকে সভাপতি এবং অধ্যাপিকা অপু উকিলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ৩ মাস পর ২৫ জুলাই যুব মহিলা লীগের ১২১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। দলটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চলতি বছরের মার্চে বর্তমান কমিটির মেয়ার শেষ হয়েছে।