ঢাকা ০৮:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কাজাখস্তানে যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত, বহু হতাহতের আশঙ্কা সোনারগাঁও হোটেলে বড়দিনের উৎসবে মেতেছে শিশুরা মেঘ-পাহাড়ের টানে বান্দরবানে পর্যটকের ভিড়, শতভাগ হোটেল বুকড জাহাজে সাত খুন : জড়িতদের গ্রেপ্তার না করলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি প্রধান উপদেষ্টাকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ফোন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রিভা দুই দিনের রিমান্ডে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বায়তুল মোকাররমে বিশেষ দোয়া খুবির শিক্ষার্থীকে মারধর করায় বিএনপির দুই নেতা বহিষ্কার ফ্রান্সের মায়োটে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব, শত শত মানুষের মৃত্যুর শঙ্কা পদত্যাগ করে সিরিয়া ছেড়েছেন বাশার আল-আসাদ : রাশিয়া

উদ্বোধনের অপেক্ষায় স্বপ্নের মেট্রোরেল

অনলাইন রিপোর্ট॥

আগামী বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বহু প্রতিক্ষীত মেট্রোরেলের উত্তরা-আগারগাঁও অংশ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও যুক্ত হতে যাচ্ছে মেট্রোরেল। উদ্বোধনের পরদিন থেকেই দেশে প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করবে  স্বপ্নের মেট্রোরেল।

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে সীমিত পরিসরে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে ট্রেন যার দূরত্ব ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। তবে বাকি সাতটি স্টেশন পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে খোলা হবে। নিয়ম করে প্রতিদিন চার ঘণ্টা উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে ছুটবে স্বপ্নের মেট্রোরেল।

রাজধানীর উত্তরা ও আগারগাঁও স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা মেট্রোরেলের দুটি স্টেশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। উদ্বোধন উপলক্ষে নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় স্টেশনে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রী হবেন বলে জানা গেছে।

মেট্রোরেল নির্মাণে নিযুক্ত ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, প্রাথমিক পরিকল্পনায় দিনে সর্বোচ্চ চার ঘণ্টা ট্রেন চালানো হবে। প্রথমে উত্তরা থেকে আগারগাঁও সরাসরি সার্ভিস দেবে এমআরটি সিক্স। আপাতত থামবে না আর কোন স্টেশনে।

তবে প্রতি সাত বা দশদিন পরপর বদল হবে পরিকল্পনা। সবকিছু নির্ভর করবে যাত্রীর চাপ আর অভ্যস্ততার ওপর। তবে সব পাঠ চুকিয়ে ২৬ মার্চ পূর্ণ অপারেশনে যেতে চায় কর্তৃপক্ষ। এর আগে ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর গণপরিবহনের এ নতুন দিগন্তের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য মতে, ১২টি ট্রেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে শুরুর দিকে পাঁচটি ট্রেনের বেশি প্রয়োজন হবে না। এজন্য পাঁচটি ট্রেন থাকবে। চলাচল শুরুর তিন মাস পর থেকে সব ট্রেন চলাচল শুরু করবে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার পথে মোট ৯টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি), উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও। উদ্বোধনের দিনে শুরু ও শেষের স্টেশন দুটি খুলে দেওয়া হবে।

এদিকে সরকার মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ঠিক করেছে ২০ টাকা। আর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভাড়া হবে ১০০ টাকা। প্রথম পর্যায়ে মেট্রোরেল যে অংশে চলাচল শুরু করবে, সেই উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া হবে ৬০ টাকা। উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে উত্তরা সেন্টার (মধ্য) ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের ভাড়া একই ২০ টাকা। এ ছাড়া প্রথম স্টেশন (উত্তরা উত্তর) থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা এবং শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া মেট্রোরেলের প্রতি ট্রেনে ছয়টি কোচ থাকছে। এর প্রতিটিতে বসার ব্যবস্থা আছে ৫৪ জনের। সব মিলিয়ে একটি ট্রেনে বসে যেতে পারবেন ৩০৬ জন। মাঝখানের প্রশস্ত জায়গায় যাত্রীরা দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করবেন। সব মিলিয়ে একটি ট্রেনে বসে ও দাঁড়িয়ে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০৮ যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন। প্রতিটি ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। তবে ট্রেন কোন স্থানে কত গতিতে চলবে, সেটা ঠিক করবে কর্তৃপক্ষ। ট্রেনের নকশা প্রণয়ন ও তৈরির কাজ করছে জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়াম।

ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোরেলে চলাচলের জন্য তাৎক্ষণিক টিকিট সংগ্রহ করা ছাড়াও সাপ্তাহিক ও মাসিক পারিবারিক কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগে থেকে এসব কার্ড কিনতে হবে। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকা যন্ত্রেও কার্ডে টাকা ভরা (রিচার্জ) যাবে। প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের সময় যাত্রীদের কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, তা নাহলে দরজা খুলবে না। এরপর নেমে যাওয়ার সময় আবার কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, তা নাহলে যাত্রী বের হতে পারবেন না। আরেকটি কার্ড সাময়িক, যা প্রতি যাত্রায় দেওয়া হবে। স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের ভাড়া দিয়ে এ কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। এটিও স্মার্ট কার্ডের মতো। ভাড়ার অতিরিক্ত যাতায়াত করলে ওই কার্ড দিয়ে দরজা খুলতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা কর্মীদের কাছে বাড়তি ভাড়া পরিশোধ করেই বের হতে হবে। স্টেশনে টিকিট বিক্রির দুটি কাউন্টার থাকবে। এর একটিতে সাধারণ মানুষ টিকিট কিনতে পারবেন। অন্যটিতে কেনার সুযোগ পাবেন শারীরিক ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা।

উদ্বোধনের দিন যে নির্দেশনা মানতে হবে

উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ী পর্যন্ত মেট্রোরেল সংলগ্ন এলাকার ভবনের বাসিন্দাদের জন্য সাতটি নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্টোপলিটন (ডিএমপি) পুলিশ। ডিএমপির সাত নির্দেশনায় বলা হয়েছে-

১. কোনো ভবন বা ফ্ল্যাটে ২৯ ডিসেম্বরের আগে নতুন ভাড়াটিয়া উঠতে পারবেন না;

২. কোনো বাণিজ্যিক ভবনে ২৮ ডিসেম্বরে নতুন কোনো অফিস, দোকান, রেস্তোরাঁ খোলা যাবে না;

৩. ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল সংলগ্ন কোনো ভবনের বেলকনি ও ছাদে কাপড় শুকাতে দেওয়া যাবে না এবং কেউ দাঁড়াতে পারবেন না;

৪. ওই সব এলাকার ভবন বা ফ্ল্যাটে ওই দিন কোনো ছবি বা ফেস্টুন লাগানো যাবে না;

৫. মেট্রোরেল সংলগ্ন কোনো ভবনের বাণিজ্যিক এলাকার বা আবাসিক হোটেলে ২৮ ডিসেম্বর কেউ অবস্থান করতে পারবেন না;

৬. আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ি পর্যন্ত এলাকার কোনো ভবন বা ফ্ল্যাটে যদি বৈধ অস্ত্র থাকে, তা ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে থানায় জমা দিতে হবে;

৭. মেট্রোরেলের দুই পাশের সব ব্যাংক বা এটিএম বুথ ২৮ ডিসেম্বর সকাল থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলা পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে।

২০১২ সালে মেট্রোরেল প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের দিকে। গত জুলাই পর্যন্ত উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৮১ দশমিক ৭০ শতাংশ। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৯৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

প্রথম দিকে মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। মেট্রোরেলের পথ সম্প্রসারণ, স্টেশন প্লাজা নির্মাণ, কিছু স্টেশনে নতুন করে জমি অধিগ্রহণ, পরামর্শক ব্যয় বৃদ্ধি, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বাড়তি ভ্যাটসহ বিভিন্ন উপকরণ যুক্ত হয়েছে। এ জন্য প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে। এখন প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকা। সর্বশেষ যে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে জাইকা দেবে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। সরকার খরচ করবে ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। শুরুতে জাইকার দেওয়ার কথা ছিল ১৬ হাজার কোটি টাকা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

কাজাখস্তানে যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত, বহু হতাহতের আশঙ্কা

উদ্বোধনের অপেক্ষায় স্বপ্নের মেট্রোরেল

প্রকাশিত : ১১:৩২:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২

অনলাইন রিপোর্ট॥

আগামী বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বহু প্রতিক্ষীত মেট্রোরেলের উত্তরা-আগারগাঁও অংশ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও যুক্ত হতে যাচ্ছে মেট্রোরেল। উদ্বোধনের পরদিন থেকেই দেশে প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করবে  স্বপ্নের মেট্রোরেল।

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে সীমিত পরিসরে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে ট্রেন যার দূরত্ব ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। তবে বাকি সাতটি স্টেশন পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে খোলা হবে। নিয়ম করে প্রতিদিন চার ঘণ্টা উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে ছুটবে স্বপ্নের মেট্রোরেল।

রাজধানীর উত্তরা ও আগারগাঁও স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা মেট্রোরেলের দুটি স্টেশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। উদ্বোধন উপলক্ষে নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় স্টেশনে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রী হবেন বলে জানা গেছে।

মেট্রোরেল নির্মাণে নিযুক্ত ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, প্রাথমিক পরিকল্পনায় দিনে সর্বোচ্চ চার ঘণ্টা ট্রেন চালানো হবে। প্রথমে উত্তরা থেকে আগারগাঁও সরাসরি সার্ভিস দেবে এমআরটি সিক্স। আপাতত থামবে না আর কোন স্টেশনে।

তবে প্রতি সাত বা দশদিন পরপর বদল হবে পরিকল্পনা। সবকিছু নির্ভর করবে যাত্রীর চাপ আর অভ্যস্ততার ওপর। তবে সব পাঠ চুকিয়ে ২৬ মার্চ পূর্ণ অপারেশনে যেতে চায় কর্তৃপক্ষ। এর আগে ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর গণপরিবহনের এ নতুন দিগন্তের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য মতে, ১২টি ট্রেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে শুরুর দিকে পাঁচটি ট্রেনের বেশি প্রয়োজন হবে না। এজন্য পাঁচটি ট্রেন থাকবে। চলাচল শুরুর তিন মাস পর থেকে সব ট্রেন চলাচল শুরু করবে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার পথে মোট ৯টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি), উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও। উদ্বোধনের দিনে শুরু ও শেষের স্টেশন দুটি খুলে দেওয়া হবে।

এদিকে সরকার মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ঠিক করেছে ২০ টাকা। আর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভাড়া হবে ১০০ টাকা। প্রথম পর্যায়ে মেট্রোরেল যে অংশে চলাচল শুরু করবে, সেই উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া হবে ৬০ টাকা। উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে উত্তরা সেন্টার (মধ্য) ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের ভাড়া একই ২০ টাকা। এ ছাড়া প্রথম স্টেশন (উত্তরা উত্তর) থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা এবং শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া মেট্রোরেলের প্রতি ট্রেনে ছয়টি কোচ থাকছে। এর প্রতিটিতে বসার ব্যবস্থা আছে ৫৪ জনের। সব মিলিয়ে একটি ট্রেনে বসে যেতে পারবেন ৩০৬ জন। মাঝখানের প্রশস্ত জায়গায় যাত্রীরা দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করবেন। সব মিলিয়ে একটি ট্রেনে বসে ও দাঁড়িয়ে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০৮ যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন। প্রতিটি ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। তবে ট্রেন কোন স্থানে কত গতিতে চলবে, সেটা ঠিক করবে কর্তৃপক্ষ। ট্রেনের নকশা প্রণয়ন ও তৈরির কাজ করছে জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়াম।

ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোরেলে চলাচলের জন্য তাৎক্ষণিক টিকিট সংগ্রহ করা ছাড়াও সাপ্তাহিক ও মাসিক পারিবারিক কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগে থেকে এসব কার্ড কিনতে হবে। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকা যন্ত্রেও কার্ডে টাকা ভরা (রিচার্জ) যাবে। প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের সময় যাত্রীদের কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, তা নাহলে দরজা খুলবে না। এরপর নেমে যাওয়ার সময় আবার কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, তা নাহলে যাত্রী বের হতে পারবেন না। আরেকটি কার্ড সাময়িক, যা প্রতি যাত্রায় দেওয়া হবে। স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের ভাড়া দিয়ে এ কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। এটিও স্মার্ট কার্ডের মতো। ভাড়ার অতিরিক্ত যাতায়াত করলে ওই কার্ড দিয়ে দরজা খুলতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা কর্মীদের কাছে বাড়তি ভাড়া পরিশোধ করেই বের হতে হবে। স্টেশনে টিকিট বিক্রির দুটি কাউন্টার থাকবে। এর একটিতে সাধারণ মানুষ টিকিট কিনতে পারবেন। অন্যটিতে কেনার সুযোগ পাবেন শারীরিক ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা।

উদ্বোধনের দিন যে নির্দেশনা মানতে হবে

উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ী পর্যন্ত মেট্রোরেল সংলগ্ন এলাকার ভবনের বাসিন্দাদের জন্য সাতটি নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্টোপলিটন (ডিএমপি) পুলিশ। ডিএমপির সাত নির্দেশনায় বলা হয়েছে-

১. কোনো ভবন বা ফ্ল্যাটে ২৯ ডিসেম্বরের আগে নতুন ভাড়াটিয়া উঠতে পারবেন না;

২. কোনো বাণিজ্যিক ভবনে ২৮ ডিসেম্বরে নতুন কোনো অফিস, দোকান, রেস্তোরাঁ খোলা যাবে না;

৩. ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল সংলগ্ন কোনো ভবনের বেলকনি ও ছাদে কাপড় শুকাতে দেওয়া যাবে না এবং কেউ দাঁড়াতে পারবেন না;

৪. ওই সব এলাকার ভবন বা ফ্ল্যাটে ওই দিন কোনো ছবি বা ফেস্টুন লাগানো যাবে না;

৫. মেট্রোরেল সংলগ্ন কোনো ভবনের বাণিজ্যিক এলাকার বা আবাসিক হোটেলে ২৮ ডিসেম্বর কেউ অবস্থান করতে পারবেন না;

৬. আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ি পর্যন্ত এলাকার কোনো ভবন বা ফ্ল্যাটে যদি বৈধ অস্ত্র থাকে, তা ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে থানায় জমা দিতে হবে;

৭. মেট্রোরেলের দুই পাশের সব ব্যাংক বা এটিএম বুথ ২৮ ডিসেম্বর সকাল থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলা পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে।

২০১২ সালে মেট্রোরেল প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের দিকে। গত জুলাই পর্যন্ত উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৮১ দশমিক ৭০ শতাংশ। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৯৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

প্রথম দিকে মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। মেট্রোরেলের পথ সম্প্রসারণ, স্টেশন প্লাজা নির্মাণ, কিছু স্টেশনে নতুন করে জমি অধিগ্রহণ, পরামর্শক ব্যয় বৃদ্ধি, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বাড়তি ভ্যাটসহ বিভিন্ন উপকরণ যুক্ত হয়েছে। এ জন্য প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে। এখন প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকা। সর্বশেষ যে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে জাইকা দেবে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। সরকার খরচ করবে ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। শুরুতে জাইকার দেওয়ার কথা ছিল ১৬ হাজার কোটি টাকা।