বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সততা ও স্বচ্ছতার মূর্তপ্রতীক বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, ১৯৫১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বেজড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত খান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম সিরাজুল করিম খান ওরফে নান্না খান ও মাতা মরহুমা খালেদা করিম খান। শিক্ষা জীবনে মুহাম্মদ ফারুক খান ঢাকার আরমানীটোলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। ঢাকা কলেজে পড়া কালিন সময়ে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর তিনি সেনাবাহিনীতে অফিসার হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল কমিশন লাভ করেন। পরবর্তীতে পাকিস্তান সামরিক একাডেমি থেকে গ্রাজুয়েশন এবং ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিফেন্স স্টাডিজ এ মাস্টার্স করেন। রেখেছেন। সেনাবাহিনীতে চাকরি কালীন সময়ে তিনি ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট (সিনিয়র টাইগার) এবং ২৫ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট (মৃত্যুঞ্জয়ী পঁচিশ) এর অধিনায়কের দায়িত্ব পালনসহ বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি, এসআই এন টি, স্টাফ কলেজ এবং সেনা সদরে গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ্যতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ থেকে ও ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃতিত্বের সাথে কমান্ড এবং স্টাফ কোর্স সম্পন্ন করেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন দক্ষ প্যারাট্রপার।
দীর্ঘ ২৬ বছর সততা ও দক্ষতার সাথে সেনাবাহিনীতে চাকরি করার পর ১৯৯৫ সালে লে. কর্ণেল পদে কর্মরত থাকাকালে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দেন। আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে পর্যায়ক্রমে শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়ামের সদস্য হিসেবে টানা দ্বিতীয়বার দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড এবং জাতীয় নির্বাচনের জন্য গঠিত মনোনয়ন বোর্ডেরও সদস্য হিসেবে দলীয় দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও অসংখ্য বার দেশের বাইরে দেশ ও দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে অনেক জায়গায় নির্বাচন সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। সাংগঠনিক কাজে দেশের বিভিন্ন জেলায় সাংগঠনিক সফর করেছেন। সৎ ও স্বচ্ছ রাজনীতিক হিসেবে কুটনৈতিক পাড়ায় মুহাম্মদ ফারুক খানের রয়েছে বিশেষ করে তাঁর এ দীর্ঘ প্রায় তিন দশকের রাজনৈতিক জীবনে দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিন্দু পরিমাণ অভিযোগও কেউ করতে পারেনি। নিজের সততা, সহনশীলতা, ভদ্রতার জন্য তিনি দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছেই একজন সজ্জন রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত এবং নিজ এলাকার জনগণের প্রানের মানুষ।
পারিবারিক জীবনে মুহাম্মদ ফারুক খান ১৯৭৪ সালে ঢাকার বিক্রমপুরের সম্ভ্রান্ত খান পরিবারের মরহুম দবির উদ্দিন খানের কন্যা নিলুফার খানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি কানতারা কে খান ও কারিনা কে খান দুই কন্যা সন্তানের জনক। তার ভাইয়েরাও নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বমহিমায় উজ্জ্বল ও দেশের সনামধন্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।
এই ৭৩ বছর বয়সী দক্ষ রাজনীতিবিদ মুহাম্মদ ফারুক খান ১৯৯৬ সালে ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২১৫ গোপালগঞ্জ -১ (মুকসুদপুর-কাশিয়ানী) নির্বাচনী এলাকা থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্ত হয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৬ সাল থেকে একই নির্বাচনী এলাকার জনগণের পক্ষে অদ্যাবধি মহান সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। অর্থাৎ গোপালগঞ্জ-১ আসন থেকে তিনি একাধারে সপ্তম, অস্টম, নবম, দশম এবং বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়ে এ আসনের জনগণের সেবা করে যাচ্ছেন। বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশ সরকারের একজন মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং পরের দিন ৭ জানুয়ারি মন্ত্রী হিসেবে বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। পাঁচ বছর মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তাঁর মন্ত্রণালয়ে কোন প্রকার দূর্নীতি বা বিশৃঙ্খলা খবর পাওয়া যায় নাই।
১৯৯৬ সাল থেকে একটানা এমপি থাকায় মুহাম্মদ ফারুক খান তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি সমগ্র নির্বাচনী এলাকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও গ্রামীণ অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। টেংরাখোলা ব্রিজ,জলিরপাড় ব্রিজসহ অসংখ্য ব্রিজ কালভার্ট তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টায় নির্মিত হয়েছে। মুকসুদপুর উপজেলার টেংরাখোলা বাজার, বনগ্রাম বাজার ও কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়ায় নদী ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা করেছেন এবং খালগুলো খননের ব্যবস্থা করেছেন। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মুকসুদপুর কলেজ এবং সাবের মিয়া জসীমউদ্দিন (এসজে) উচ্চবিদ্যালয় সরকারিকরণসহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন ও সংস্কার করা হয়েছে। নিজ নামে মুকসুদপুরে প্রতিষ্ঠা করেছেন ফারুক খান উচ্চবিদ্যালয়। নির্বাচনী এলাকার প্রায় সকল মসজিদ মন্দিরে তাঁর উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনতে পেরেছেন নিজ নির্বাচনী এলাকাকে। মুকসুদপুর হাসপাতালকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করণসহ কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্যানিটেশন কার্যক্রমের উন্নয়ন ঘটিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছেন।
তাঁর এ দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় তিনি জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। করোনা কালীন সময়েও ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তিন পর্যায়ে সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন। তাঁর সততা, আন্তরিকতা, উন্নয়ন প্রচেষ্টা এবং জনসেবার জন্য তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার প্রানপুরুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।
নিজ নির্বাচনী এলাকার দলীয় শতভাগ আস্থা অর্জনে তিনি সক্ষম হয়েছেন। সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আস্থায় রেখে এলাকাকে তিনি শান্তি, সৌহার্দ্য ও সহ অবস্থানের একটি এলাকায় পরিণত করেছেন। দীর্ঘদিন এমপি থাকায় তিনি তাঁর এলাকার আওয়ামী পরিবারের একক অভিবাবক। জাতীয় নির্বাচনের সময় হলে অনেকেই মনোনয়ন দাবি করলেও মুলত এ নির্বাচনী এলাকার তৃনমুলের নেতাকর্মীদের সাথে তাঁদের কোন সংযোগ নেই। সকল নির্বাচনেই তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা জামানত হারিয়েছেন।
অপরপক্ষে মুহাম্মদ ফারুক খান করোনাকালীন এ সময়টা বাদে প্রতি মাসে এক বা একাধিক বার এলাকায় আসেন, প্রতিদিন ঢাকার নিজ বাস ভবনে এলাকার জনগণের সাথে সাক্ষাৎ করেন। ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও দ্বিধাহীন ভাবে তাঁর সাথে ফোনে কথা বলতে পারেন। নির্বাচনী এলাকার প্রায় প্রতিটি নেতাকর্মী তাঁর পরিচিত। এমন কোনো ওয়ার্ড নেই যে ওয়ার্ডে ফারুক খান যাননি। শুধু ঢাকায় বসে রাজনীতি করা নেতা নন ফারুক খান। জনগণের দেয়া ক্ষমতার অপব্যবহার কখনো করেন নাই। দীর্ঘ এ সময়ে ফারুক খান কাউকে রাজনৈতিক ভাবে মামলা হামলা করে হয়রানি করেননি। একারণেই একজন নির্জলা ভদ্র মানুষ হিসেবে এলাকার সর্বস্তরের মানুষের কাছে তিনি নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি উন্নত, সমৃদ্ধ, দারিদ্র মুক্ত, সম্পীতির এক সোনার বাংলাদেশ গড়তে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুস্বরণ করেছেন এবং নিজ দল,জাতি ও দেশের ভাবমূর্তি সমূজ্জল করেছেন।
তথ্যসূত্র: জাহিদুর রহমান
সংবাদ শিরোনাম :
জননেতা লেঃ কর্ণেল (অবঃ) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি
- রক্তিম সূর্য ডেস্ক
- প্রকাশিত : ০৩:২৩:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩
- ৬১১ বার পঠিত
Tag :
জনপ্রিয়