রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে সরকার। রোববার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। এই কারফিউ চলাকালে ‘বিশেষ ও জরুরি প্রয়োজন’ ছাড়া কেউ বাইরে বের হলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন তিনি।
এসময় কমিশনার হাবিবুর রহমান কারফিউ চলাকালে কাউকে বাসা থেকে বের হতে নিষেধ করেন। বের হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, শিক্ষার্থীদের ব্যানারে জামায়াত, শিবির ও বিএনপির নাশকতাকারীরা রাস্তায় নেমেছে। তাদের দমাতে যেভাবেই আইন প্রয়োগ করলে হবে, সেভাবেই করা হবে।’
তিনি বলেন, সরকার সহানুভূতিশীল হয়ে আটক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ইতোমধ্যে মুক্তি দিয়েছে। তারপরও শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বিএনপি-জামায়াত শিবির নাশকতাকারী চক্র গতকাল থেকেই ভয়াবহ নাশকতা ও অগ্নিসন্ত্রাস করছে। আজকে সারাদেশে তারা ব্যপক তাণ্ডব চালায়।
দিনভর সংঘর্ষ ও তাণ্ডবের সহিংসতার বিবরণ তুলে ধরে কমিশনার বলেন, ঢাকা মহানগরীর ধানমন্ডি, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, শাহবাগ, প্রেসক্লাব, বাংলা মটর, মোহাম্মদপুর, কাজলা, উত্তরাসহ বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ ও নজীরবিহীন সন্ত্রাসী হামলা চালায়। তারা রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে দেশীয় অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল বোমাসহ সমবেত হয়ে নিরীহ জনগণ ও পুলিশের ওপর আক্রমন চালায়।
তাদের নারকীয় তাণ্ডবের হাত থেকে রেহাই পায়নি দেশের চিকিৎসা সেবার প্রাণকেন্দ্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ও। তারা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ভাঙচুর করে ও ভেতরে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স ও মোটরসাইকেলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সন্ত্রাসীরা রাজধানীর সিএমএম আদালতেও হামলা করে।
তারা খিলগাঁও থানা, যাত্রাবাড়ী থানা, শাহবাগ থানা আক্রমন করে এবং শহরের ১০টি পুলিশ বক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা কয়েকটি পুলিশ গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তাদের গুলিবর্ষণে ৩ জন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়। ওয়ারী বিভাগের ডিসিসহ ১১ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের নাশকতামূলক কার্যকলাপ নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে তারা কেউই ছাত্র নয়, তারা সন্ত্রাসী, তারা জঙ্গি।
তিনি আরও বলেন, কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারে এবং কোথাও যেন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে।
এ সহিংসতায় পেশাগত দায়িত্বপালনকালে এখন পর্যন্ত ডিএমপির প্রায় ৩৩০ জন পুলিশ সদস্য আহত ও ৩ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়। আজকেও সিরাজগঞ্জ জেলায় এনায়েতপুর থানায় দায়িত্বরত ১৩ জন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এছাড়া পেশাগত দায়িত্বপালনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অসংখ্য সাংবাদিক হতাহত হয়।
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে যেকোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে অনুরোধ জানান তিনি।
সংবাদ শিরোনাম :
বের হলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে: ডিএমপি কমিশনার
- রক্তিম সূর্য ডেস্ক
- প্রকাশিত : ০৮:৪৬:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ অগাস্ট ২০২৪
- ৫৩২ বার পঠিত
Tag :
জনপ্রিয়