ঢাকা ১২:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ভারত

ব্যাপক আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার দেশত্যাগে বাংলাদেশে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পর্যবেক্ষণের নীতি অনুসরণ করবে ভারত। পাশাপাশি নিজেদের সেনাবাহিনীকেও সতর্ক অবস্থানে রাখবে তারা।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠকে এ কথা জানান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে ষড়যন্ত্রও থাকতে পারে।
এর আগে বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য সর্বদলীয় বৈঠকে বসে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সকালে ভারতীয় পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ সময় বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং ভারত সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে উপস্থিত নেতাদের ব্রিফ করেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, জয়শঙ্কর ছাড়াও সর্বদলীয় এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং সংসদীয় বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজু।
সূত্র বলছে, সর্বদলীয় বৈঠকে জয়শঙ্কর বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারতের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করেন। এ বিষয়ে অন্য কোনো দেশ হস্তক্ষেপ করলে কী নীতি গ্রহণ করা হবে, সে বিষয়ও উঠে আসে বৈঠকে।
এ সময় লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী জানতে চান, বাংলাদেশ ইস্যুতে বাইরের কোনো গোষ্ঠীর ভূমিকা নিয়ে সরকারের কাছে তথ্য আছে কি না। উত্তরে জয়ের বলেন, ভারত সরকারের কাছে শুধু এই তথ্য আছে যে পাকিস্তানের কূটনীতিকরা বিক্ষোভের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রোফাইল ছবি পরিবর্তন করেছেন।
বৈঠকে রাহুল গান্ধী ছাড়াও কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা কে সি ভানুগোপাল, জনতা দলের লাল্লান সিং, সমাজবাদী পার্টির রাম গোপাল যাদব, তৃণমূল কংগ্রেসের সুদ্বীপ বন্দ্যোপাধ্যায়সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, বৈঠকে জয়শঙ্কর বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে ষড়যন্ত্রও থাকতে পারে। তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, শেখ হাসিনাকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল জড়িত থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সোমবার দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন।
সূত্রমতে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবতরণ করেন শেখ হাসিনা। ইন্ডিয়া টুডে জানায়, নয়াদিল্লির গাজিয়াবাদে সেনাবাহিনীর হিন্ডন এয়ারবাসে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩৬ মিনিটে অবতরণ করেন তিনি। পরবর্তীতে সন্ধ্যায় ভারতের মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল গিয়ে সাক্ষাৎ করেন শেখ হাসিনার সঙ্গে।
তবে তিনি ভারতের ঠিক কোন জায়গায় অবস্থান করছেন অথবা তিনি সেখানে থাকবেন না তৃতীয় কোনো দেশে যাবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রয়েছে ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত। সোমবার সীমান্তে সতর্কতা জারি করেছে ভারত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ট্রেন চলাচলও বন্ধ রয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ভারত

প্রকাশিত : ০৬:২৬:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪

ব্যাপক আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার দেশত্যাগে বাংলাদেশে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পর্যবেক্ষণের নীতি অনুসরণ করবে ভারত। পাশাপাশি নিজেদের সেনাবাহিনীকেও সতর্ক অবস্থানে রাখবে তারা।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠকে এ কথা জানান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে ষড়যন্ত্রও থাকতে পারে।
এর আগে বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য সর্বদলীয় বৈঠকে বসে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সকালে ভারতীয় পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ সময় বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং ভারত সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে উপস্থিত নেতাদের ব্রিফ করেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, জয়শঙ্কর ছাড়াও সর্বদলীয় এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং সংসদীয় বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজু।
সূত্র বলছে, সর্বদলীয় বৈঠকে জয়শঙ্কর বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারতের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করেন। এ বিষয়ে অন্য কোনো দেশ হস্তক্ষেপ করলে কী নীতি গ্রহণ করা হবে, সে বিষয়ও উঠে আসে বৈঠকে।
এ সময় লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী জানতে চান, বাংলাদেশ ইস্যুতে বাইরের কোনো গোষ্ঠীর ভূমিকা নিয়ে সরকারের কাছে তথ্য আছে কি না। উত্তরে জয়ের বলেন, ভারত সরকারের কাছে শুধু এই তথ্য আছে যে পাকিস্তানের কূটনীতিকরা বিক্ষোভের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রোফাইল ছবি পরিবর্তন করেছেন।
বৈঠকে রাহুল গান্ধী ছাড়াও কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা কে সি ভানুগোপাল, জনতা দলের লাল্লান সিং, সমাজবাদী পার্টির রাম গোপাল যাদব, তৃণমূল কংগ্রেসের সুদ্বীপ বন্দ্যোপাধ্যায়সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, বৈঠকে জয়শঙ্কর বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে ষড়যন্ত্রও থাকতে পারে। তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, শেখ হাসিনাকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল জড়িত থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সোমবার দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন।
সূত্রমতে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবতরণ করেন শেখ হাসিনা। ইন্ডিয়া টুডে জানায়, নয়াদিল্লির গাজিয়াবাদে সেনাবাহিনীর হিন্ডন এয়ারবাসে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩৬ মিনিটে অবতরণ করেন তিনি। পরবর্তীতে সন্ধ্যায় ভারতের মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল গিয়ে সাক্ষাৎ করেন শেখ হাসিনার সঙ্গে।
তবে তিনি ভারতের ঠিক কোন জায়গায় অবস্থান করছেন অথবা তিনি সেখানে থাকবেন না তৃতীয় কোনো দেশে যাবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রয়েছে ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত। সোমবার সীমান্তে সতর্কতা জারি করেছে ভারত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ট্রেন চলাচলও বন্ধ রয়েছে।