ঢাকা ১২:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাতিল হলো ১৫ই আগস্টের ছুটি

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদন হয়। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে দিবসটি আর রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠক হয় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে ব্যাপক ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের বিষয়টি গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার দিন ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছিল। দিনটি ছিল সরকারি ছুটি। ‘ক’ ক্যাটেগরির জাতীয় দিবস হিসেবে এটি পালিত হয়।
গত সোমবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বিএনপি-জামায়াত ছাড়াও গণতন্ত্র মঞ্চ, সিপিবি, বাসদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, এবি পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও গণঅধিকার পরিষদের দুই অংশের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

যমুনায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের দিন ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হবে কিনা, সে বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত আসে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, কোনো কোনো দল ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস বাতিল করার কথা বলে। আবার কোনো কোনো দল জাতীয় শোক দিবস বাতিল না করার পক্ষে মত দেয়।

একই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ ৩৫টি ছাত্র সংগঠন এক মতবিনিময় সভায় ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন না করার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। উপস্থিত সব ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে লিখিতভাবে একমত পোষণ করেন।
দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত হয় সরকার। তখন ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন শুরু হয়। পরে ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে।

এর ছয় বছর পর হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পুনর্বহাল করা হয়। এর পর থেকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছিল।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে নিহত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ওই সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বাঁচেন তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

বাতিল হলো ১৫ই আগস্টের ছুটি

প্রকাশিত : ০৩:৪৭:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদন হয়। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে দিবসটি আর রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠক হয় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে ব্যাপক ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের বিষয়টি গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার দিন ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছিল। দিনটি ছিল সরকারি ছুটি। ‘ক’ ক্যাটেগরির জাতীয় দিবস হিসেবে এটি পালিত হয়।
গত সোমবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বিএনপি-জামায়াত ছাড়াও গণতন্ত্র মঞ্চ, সিপিবি, বাসদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, এবি পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও গণঅধিকার পরিষদের দুই অংশের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

যমুনায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের দিন ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হবে কিনা, সে বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত আসে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, কোনো কোনো দল ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস বাতিল করার কথা বলে। আবার কোনো কোনো দল জাতীয় শোক দিবস বাতিল না করার পক্ষে মত দেয়।

একই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ ৩৫টি ছাত্র সংগঠন এক মতবিনিময় সভায় ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন না করার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। উপস্থিত সব ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে লিখিতভাবে একমত পোষণ করেন।
দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত হয় সরকার। তখন ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন শুরু হয়। পরে ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে।

এর ছয় বছর পর হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পুনর্বহাল করা হয়। এর পর থেকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছিল।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে নিহত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ওই সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বাঁচেন তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।