জবি সংবাদদাতাঃ যে কোনো দুর্যোগ দৈবপাকে দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষই বিপাকে পড়ে বেশি। তাদের পক্ষে একদিকে শীতবস্ত্র ও লেপ-কম্বল কিনে শীত নিবারণ করা যেমন দুরূহ, অন্যদিকে পুষ্টিহীনতার কারণে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও তাদের কম। ফলে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে তারাই আক্রান্ত হয় বেশি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিলোসোফি কালচারাল ক্লাবের পক্ষ থেকে এর জন্য শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে শীতবস্ত্র বিতরণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় ফিলোসোফি কালচারাল ক্লাবের অনলাইন মিটিংয়ে প্রধান অতিথি বক্তব্যে ক্লাবের মডারেটর সহকারী অধ্যাপক জসিম খান এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
মডারেটর বলেন, যার যেমন সামর্থ আছে সে তার জায়গা থেকে যেন আমাদের এই উদ্যোগে সহযোগিতা করেন। আগামী রবিবার থেকে বিভাগে চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় শীতবস্ত্র গ্রহণের জন্য বাক্স রাখা হবে। সবাই নিজের সামর্থ অনুযায়ী সাহায্য করবেন।
এসময় তিনি বলেন, ষড়ঋতুর বাংলাদেশে পৌষ ও মাঘ এ দুমাস শীতকাল। শীতকাল কারো কারো জন্য আনন্দের বিষয়। শীত মানেই কুয়াশা-মোড়ানো ভোরে চুলোর পাশে বসে পিঠা খাওয়া। ঝড়া পাতা জড়ো করে জ্বালিয়ে আগুন তাপানো। গল্পের আসরে বসে ধুমায়িত চা-কফির উষ্ণ স্বাদ। দীর্ঘ রাতে লেপ-কম্বলের ওম লাভের আনন্দ। কিন্তু যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরোয় তাদের জন্য শীত মানে ভয়াবহ দুঃসংবাদ। শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এক টুকরো শীতের কাপড় তাদের জন্য যেন শত আরাধনার ধন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনেক মানুষের প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রও নেই শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, আমাদের আশপাশেও এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। সড়কের পাশে, বাস ও ট্রেন স্টেশনে, বাজার-ঘাটে রাতের বেলা এমন অনেক অসহায় মানুষকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। আমরা যখন লেপ-কম্বল গায়ে জড়িয়ে দীর্ঘ রাত সুখ নিদ্রায় বিভোর তখন তাদের রাত কাটে নির্ঘুম অবস্থায় শীতের প্রকোপে যবুথবু হয়ে। যার পেটে ভাত নেই তার গায়ে গরম কাপড় জুটবে কোত্থেকে! আমরা কি পারি না তাদের সাহায্যে একটু এগিয়ে আসতে?
ক্লাবের সভাপতি শিমু তালুকদার বলেন, সমাজের অসহায় ও শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সকলেরই নৈতিক দায়িত্ব। অসহায়দের সাহায্যে এগিয়ে আসার মাধ্যমেই রচিত হবে মানবিক সেতুবন্ধন। আমাদের সামান্য সহযোগিতা তাদের জীবনে এনে দিতে পারে এক টুকরো সুখ। কনকনে শীতে ঠকঠক করে কাঁপা মানুষের গায়ে শীতবস্ত্র জড়িয়ে তার মুখে হাসি ফোটানোর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে। এর মাধ্যমে প্রকাশ পায় মানুষের প্রতি আমাদের মমত্ব ও ভালোবাসার।
অনলাইন মিটিং সঞ্চালনা করেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মামুন শেখ। এসময় ক্লাবের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।