অনলাইন রিপোর্ট॥
চার বছর আগেও স্বামী ও তিন সন্তানসহ অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটত নীলফামারীর ইসলামবাগ এলাকার বাসিন্দা আসমা বেগম। দিনমজুর স্বামী যা আয় করতেন, তা দিয়ে কোনোরকম দিন কাটাতেন তিনি। সেই আসমার গল্প এখন অন্যরকম। তার স্বামীকে মুদি দোকান করে দিয়েছেন। তিন সন্তান স্কুলে যায়। স্বামী-সন্তান নিয়ে বেশ ভালোই কাটছে তার দিন।
শুধ আসমা বেগম একাই নন। কাপড়ে নকশার কাজ করে তার মতো উপজেলায় দেড় হাজার নারী তাদের ভাগ্য বদলে ফেলেছেন। সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শহর ও গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে তিন শতাধিক কারচুপি কারখানা। কারখানায় কাজ করেন প্রায় দেড় হাজার নারী। এছাড়া বাড়িতেও কাজ করেন অনেকে। স্কুল-কলেজের ছাত্রীরাও পড়াশোনার ফাঁকে এ কাজ করে বাড়তি আয় করছে। শাড়িতে কারচুপির কাজ করে তারা যে অর্থ পাচ্ছেন, তা দিয়ে সংসারে অবদান রাখছেন। সুচের ফোঁড়ে দুঃখ ঘুচিয়ে সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন তারা। নকশা করা শাড়ির চাহিদা ব্যাপক। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
গত কাল সকালে শহরের ইসলামবাগ, গোলাহাট, মিস্ত্রিপাড়া ও বাঁশবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা গেল সুন্দর দৃশ্য। এলাকার নারীরা শাড়িতে নকশা তোলার কাজ করছেন। একটি সাধারণ কাপড়ে সুতা দিয়ে নকশার কাজ করার পর কতটা অসাধারণ হয়ে ওঠে, তা না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। নারীরা শাড়ি, জামাতে সুঁই সুতা দিয়ে চুমকি, জরি, পুঁতি বসানোর কাজে ব্যস্ত।
বাঁশপাড়া এলাকার বাসিন্দা খাদিজা আক্তার বলেন, আট বছর আগে তার বিয়ে হয় জামাল হোসেনের সঙ্গে। সামান্য কিছু কৃষি জমিতে স্বল্প আয় হতো। স্বামীকে নিয়ে অভাবের তাড়নায় বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। তিন বছর আগে শুরু করেন শাড়িতে নকশা তোলার কাজ। এখন নিজের বাড়ি ও আবাদি জমি আছে। কাপড়ে নকশার কাজ করে মাসে ছয় হাজার টাকা আয় করছেন।
সৈয়দপুর উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নুরুন্নাহার শাহাজাদী বলেন, এ উপজেলার শহর ও গ্রামের অনেক নারীকে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অধীনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে কাপড়ে কারচুপি ও নকশার কাজ করে অভাব দূর করেছেন। তাদের মতো অন্যদেরও প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।