ঢাকা ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

ফানুসে বড় বিপদ, কী বলছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ?

অনলাইন রিপোর্ট॥

আতশবাজির মুহুর্মুহু শব্দ, আলোকমালা আর রঙিন ফানুসে বরণ করা হয় খ্রিস্টীয় নতুন বছরকে। কিন্তু সারা দেশ যখন উৎসবের এই রঙিন আয়োজনে উন্মাতাল, তখন তাদের ফানুসে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। গেল বর্ষবরণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় দুই শতাধিক অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ফানুসের আগুন জনবহুল শহরের জন্য বড় বিপজ্জনক। কারণ ফানুসের সঙ্গে থাকা মোম সহজে নেভে না; দীর্ঘসময় ধরে জ্বলে। আর আগুনের তেজও বেশি।

এদিকে আসছে বর্ষবরণে (২০২৩ খ্রিস্টাব্দ) ফানুস কি নিষিদ্ধ হবে- এমন প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ফানুস ওড়ানো বন্ধে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আর ফায়ার সার্ভিস বলছে, এবার বর্ষবরণে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গাড়িসহ তাদের কর্মীরা অবস্থান নেবেন, যাতে অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি হলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারেন। সরজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এরই মধ্যে বিভিন্ন দোকানে ফানুসের মজুদ বাড়ানো হয়েছে। প্রকারভেদে ৪০ টাকা থেকে ৮০ টাকা দামে তা বিক্রি হচ্ছে। অনেকে আগামই তা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

এক দোকানি জানান, নতুন বছর উদযাপনে প্রতিবছরই মানুষ ফানুষ কিনে থাকে। আগে থেকে দোকানে থাকা ফানুস তিনি বিক্রি করছেন। নতুন করে কয়েকশ ফাসুন অর্ডার করেছেন। কোথা থেকে এসব ফানুস আসে জানতে চাইলে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘কেরাণীগঞ্জ বা চকবাজারের এগুলো পাইকারি বিক্রি হয়। সেখানেই অর্ডার দিলে তারাই দোকানে দিয়ে যায়।’ তাছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় ফেরি করে ফানুস বিক্রি করতে দেখা গেছে। তারাও পাইকারি কিনে এনে এগুলো বিক্রি করেন। চলতি পথে অনেকে তা কিনছেনও।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র বলছে, ফানুসের আগুন জীবন্ত। এই আগুনটা নিয়ন্ত্রণে থাকে না। ফলে এই আগুন যেকোনো ধরনের বড় বিপদের কারণ হতে পারে। গত বছর বর্ষবরণের রাতে সারা দেশ থেকে প্রচুর ফোন এসেছে ফায়ার সার্ভিস ও সরকারের জরুরি সেবা সার্ভিসে। শুধু ঢাকাতেই ডজনখানেক অগ্নিকাণ্ডস্থলে কাজ করেছে। তবে সেখানে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ নতুন বছর উদযাপনের সময় আধা ঘণ্টায় দেড়শর বেশি ফোন কল আসে।

এসব অগ্নিকাণ্ডের বেশিরভাগই ঘটেছে ফানুসের কারণে। তবে কয়েকটি অগ্নিকাণ্ড আতশবাজির কারণে ঘটে। গত খ্রিস্টীয় নববর্ষ উদযাপনে রাতে ওড়ানো ফানুস ও আতশবাজিতে রাজধানীর ধানমন্ডি, তেজগাঁও, মাতুয়াইল, রায়েরবাগসহ অনেক জায়গায় বাসার ছাদ ও সড়কের তারে আগুন লাগে। প্রতিটি স্থানে ফায়ার সার্ভিসের দুটি করে ইউনিট পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর পৌষ-সংক্রান্তিতে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান সাকরাইন উৎসবে ঢাকা শহরের মতো ঘনবসতি এলাকায় ফানুস ওড়ানোর কারণে ভয়াবহ আগুনের সৃষ্টি হতে পারে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বরাবর চিঠি দেয় পুরান ঢাকার ৮৩ জন ব্যবসায়ী ও বাড়িওয়ালা। এরপর ডিএমপির পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে সেই নির্দেশনা মানা হয়নি।

এবার ফানুস ওড়ানো বন্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা রাখা হবে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘এবছর কোনোভাবেই ফানুস ওড়াতে দেয়া হবে না। ফানুস উড়ানো নিষেধ। এক্ষেত্রে আমরা কঠোর অবস্থানে থাকব। কেউ ফানুস ওড়াতে চাইলে রাজধানীর বাইরে উড়াক।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

ফানুসে বড় বিপদ, কী বলছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ?

প্রকাশিত : ১২:০৬:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২

অনলাইন রিপোর্ট॥

আতশবাজির মুহুর্মুহু শব্দ, আলোকমালা আর রঙিন ফানুসে বরণ করা হয় খ্রিস্টীয় নতুন বছরকে। কিন্তু সারা দেশ যখন উৎসবের এই রঙিন আয়োজনে উন্মাতাল, তখন তাদের ফানুসে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। গেল বর্ষবরণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় দুই শতাধিক অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ফানুসের আগুন জনবহুল শহরের জন্য বড় বিপজ্জনক। কারণ ফানুসের সঙ্গে থাকা মোম সহজে নেভে না; দীর্ঘসময় ধরে জ্বলে। আর আগুনের তেজও বেশি।

এদিকে আসছে বর্ষবরণে (২০২৩ খ্রিস্টাব্দ) ফানুস কি নিষিদ্ধ হবে- এমন প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ফানুস ওড়ানো বন্ধে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আর ফায়ার সার্ভিস বলছে, এবার বর্ষবরণে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গাড়িসহ তাদের কর্মীরা অবস্থান নেবেন, যাতে অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি হলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারেন। সরজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এরই মধ্যে বিভিন্ন দোকানে ফানুসের মজুদ বাড়ানো হয়েছে। প্রকারভেদে ৪০ টাকা থেকে ৮০ টাকা দামে তা বিক্রি হচ্ছে। অনেকে আগামই তা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

এক দোকানি জানান, নতুন বছর উদযাপনে প্রতিবছরই মানুষ ফানুষ কিনে থাকে। আগে থেকে দোকানে থাকা ফানুস তিনি বিক্রি করছেন। নতুন করে কয়েকশ ফাসুন অর্ডার করেছেন। কোথা থেকে এসব ফানুস আসে জানতে চাইলে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘কেরাণীগঞ্জ বা চকবাজারের এগুলো পাইকারি বিক্রি হয়। সেখানেই অর্ডার দিলে তারাই দোকানে দিয়ে যায়।’ তাছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় ফেরি করে ফানুস বিক্রি করতে দেখা গেছে। তারাও পাইকারি কিনে এনে এগুলো বিক্রি করেন। চলতি পথে অনেকে তা কিনছেনও।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র বলছে, ফানুসের আগুন জীবন্ত। এই আগুনটা নিয়ন্ত্রণে থাকে না। ফলে এই আগুন যেকোনো ধরনের বড় বিপদের কারণ হতে পারে। গত বছর বর্ষবরণের রাতে সারা দেশ থেকে প্রচুর ফোন এসেছে ফায়ার সার্ভিস ও সরকারের জরুরি সেবা সার্ভিসে। শুধু ঢাকাতেই ডজনখানেক অগ্নিকাণ্ডস্থলে কাজ করেছে। তবে সেখানে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ নতুন বছর উদযাপনের সময় আধা ঘণ্টায় দেড়শর বেশি ফোন কল আসে।

এসব অগ্নিকাণ্ডের বেশিরভাগই ঘটেছে ফানুসের কারণে। তবে কয়েকটি অগ্নিকাণ্ড আতশবাজির কারণে ঘটে। গত খ্রিস্টীয় নববর্ষ উদযাপনে রাতে ওড়ানো ফানুস ও আতশবাজিতে রাজধানীর ধানমন্ডি, তেজগাঁও, মাতুয়াইল, রায়েরবাগসহ অনেক জায়গায় বাসার ছাদ ও সড়কের তারে আগুন লাগে। প্রতিটি স্থানে ফায়ার সার্ভিসের দুটি করে ইউনিট পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর পৌষ-সংক্রান্তিতে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান সাকরাইন উৎসবে ঢাকা শহরের মতো ঘনবসতি এলাকায় ফানুস ওড়ানোর কারণে ভয়াবহ আগুনের সৃষ্টি হতে পারে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বরাবর চিঠি দেয় পুরান ঢাকার ৮৩ জন ব্যবসায়ী ও বাড়িওয়ালা। এরপর ডিএমপির পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে সেই নির্দেশনা মানা হয়নি।

এবার ফানুস ওড়ানো বন্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা রাখা হবে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘এবছর কোনোভাবেই ফানুস ওড়াতে দেয়া হবে না। ফানুস উড়ানো নিষেধ। এক্ষেত্রে আমরা কঠোর অবস্থানে থাকব। কেউ ফানুস ওড়াতে চাইলে রাজধানীর বাইরে উড়াক।’