জবি সংবাদদাতা ॥ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আগামীতে সারাবিশ্বে সাইবার সিকিউরিটিতে নেতৃত্ব দিবে বাংলার যুবকেরা। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কারিগর হিসেবে বাংলার যুবকেরা সারাবিশ্বের ন্যায় এদেশেও এখন কাজ করবে।
শনিবার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটির) কর্তৃক এশিয়া আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক আইসিপিসির প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন একটি বিজ্ঞান মনুষ্য জাতি উপহার দিতে। তিনি একটা শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন। আজ থেকে ৫০ বছর আগে। যা একজন বিজ্ঞানী ডঃ কুদরতে খোদার নেতৃত্বে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য তিনি ওই শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। ১৯৭৫, ১৫ আগস্ট তাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। যার ফলে সে সময় তিনি বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠন করতে পারেননি। কিন্তু আমাদের নেত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবার তিনি একসাথে ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনে উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যার ফলে একদিকে যেরকম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি স্থাপন হয়েছে বিশাল আকারে ক্যাম্পাস হয়েছে। এখানকার শিক্ষক-শিক্ষাথীরা বাংলাদেশের প্রবলেম ক্রিয়েটর নয়, তারা সমস্যা সমাধান করেন। যারা বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আধুনিক রূপ ২০৪১ সাল নাগাদ শেখ হাসিনার ইস্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প হিসেবে নেতৃত্বের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে। আমরা শিক্ষক ও শিক্ষাথীদের জন্য একটি মোবাইল গেম এন্ড অ্যাপিকেশন ডেভেলপমেন্ট করলাম অন টেস্টিং ল্যাব আমরা উৎপাদন করলাম। মাত্র ৩৭ লক্ষ টাকা ব্যয় যে ল্যাবটি আমরা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পক্ষ থেকে উপহার দিলাম। ল্যাবটি অল্প কিছুদিন আগে আমরা উপহার দিয়েছি। সেখানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটার আছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির একদল মেধাবী ছাত্র এবং শিক্ষক মিলে এরমধ্যে তিনটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে ফেলেছে।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিইউবিটির উপ – উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী নূর। এসময় তিনি বলেন, এ প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের তরুণ সমাজ কাজ করবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে স্বপ্ন ছিল এবং জয়ের কারিসমেটিক এবং আইসিটি মন্ত্রনালয়ের তত্বাবধানে ডিজিটাল বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে রূপদান করছে। আমি নিজেকে খুব গৌরবান্বিত মনে করছি আজকের অনুষ্ঠানের জন্য। আমরা বিশ্বাস করি আজকের এই ডিজিটাল বাংলাদেশ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই রকম অনুষ্ঠানগুলো অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। স্মাট বাংলাদেশ গরার জন্য আমাদের বিউবিটি সবসময় সাথে থাকবে। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বক্তারা বলেন, আমাদের অর্থনীতিতে খনিজ সম্পদ বেশি নেই তবে আমাদের একটি মূল্যবাব সম্পদ আছে যুব সম্পদ। যা দেশের ১৫-২৭ বছরের বয়সের যুবকেরা। শিক্ষার্থীরা যখন সমস্যা সমাধান করে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করে তখন তাদের নতুন নতুন আবিষ্কার সৃষ্টি হয় এদেশের কল্যানে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিইউবিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফায়ৈজ খান বলেন, একটা জাতি যদি বদলাতে না পারে তাহলে সে জাতি উন্নতি করতে পারে না। এজন্য তরুণ প্রজন্মকে বদলানোর অনুরোধ করেন ভেঙেছে দুয়ার এসেছে জয়, তোমারি হোক জয়। এদেশে এগিয়ে যাবে তরুণদের হাত ধরে।
গত শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে প্রথম দিনে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল চেয়ারম্যান ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মেজবাহউদ্দিন আহমেদ।
শনিবার সকালে ৫ ঘন্টা ব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা ১০ থেকে ১২ টি চ্যালেঞ্জিং কম্পিউটিং সমস্যা সমাধান করে ১৬৫ টি দল। এদের মধ্যে থেকে তিনটি দলকে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় বিজয়ী হিসেবে নির্বাচন করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা জটিল অ্যালগরিদমক সমস্যা সমাধানের জন্য তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য তাদের সমস্যা-সমাধান দক্ষতা ব্যবহার করে কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিল্পকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার মধ্যদিয়ে শেষ হয় চলমান প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশের ১০৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৬৫ জন প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে ৪৯৫ জন শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে ১৬৫ টি দল এই প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।
চ্যাম্পিয়ন হলেন যারা: প্রথম স্থান অর্জন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবির) DU_NotStrongEnough দল এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন যথাক্রমে বাংলাদেশ প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) BUET Potatoes দল ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবির) JU_kzvd4729 দল। এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সেমিনার, রোডশো, মজারইভেন্ট, মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং গ্র্যান্ড গালাডিনারের আয়োজন করা হয়।