অনলাইন রিপোর্ট॥
শীতকালে চোখের সবচেয়ে প্রচলিত সমস্যা হলো, শুষ্কতা। এসময় চোখ সহজেই শুকিয়ে যায়। এটা চোখে জ্বালাপোড়া বা চুলকানির কারণ হতে পারে।
শীতকালে চোখ শুষ্ক হওয়ার অন্যতম কারণ হলো, শুষ্ক শীতল বাতাস, কম আর্দ্রতা, ঠাণ্ডা তাপমাত্রা। এছাড়া এ সময়টায় ঘর ও অফিসে হিটিং সিস্টেমের ব্যবহারও চোখ শুকিয়ে যাওয়ার একটা কারণ হতে পারে। শীতে ঠান্ডা এড়াতে জানালা দীর্ঘসময় বন্ধ রাখা হয় ও হিটার চালু করা হয়। এর ফলে বাতাসের আর্দ্রতা আরো কমে যায়। এটা চোখের জন্য ভালো নয়।
শীতকালে চোখ থেকে পানি ঝরার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এটা সাধারণত চোখ শুষ্ক হওয়ার কারণেই হয়ে থাকে। চিকিৎসকদের মতে, চোখের শুষ্কতা সমস্যা দীর্ঘদিন থাকলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে অথবা কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হলে সময় পরিক্রমায় অন্ধত্বেরও ঝুঁকি থাকে।
শীতকালে চোখের শুষ্কতা এড়াতে করণীয়
পর্যাপ্ত পানি পান করুন: শীতকালে অনেকেরই পানি পানের প্রবণতা কমে যায়। কিন্তু চোখকে আর্দ্র রাখতে এসময়ও প্রচুর পানি পান করতে হবে। দিনে কমপক্ষে আট গ্লাস (প্রায় দুই লিটার) পানি পানের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। এছাড়া যখন জেগে থাকবেন, তখন হিউমিডিফাইয়ার চালু করুন। এটা ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা যোগাবে।
আই ড্রপস ব্যবহার করুন: চোখ শুকিয়ে গেলে স্বস্তি পেতে লুব্রিকেটিং আই ড্রপস বা আর্টিফিশিয়াল টিয়ারস ব্যবহার করতে পারেন। এটা ব্যবহার করতে চিকিৎসকের অনুমতি লাগে না, চোখে শুষ্কতার লক্ষণ থাকলেই ব্যবহার করা যাবে।
পলক ফেলুন: কম্পিউটার বা অন্য স্ক্রিনের দিকে একনাগাড়ে তাকিয়ে থাকবেন না। পলক ফেলার স্বাভাবিকতা ব্যাহত হলে চোখ দ্রুত শুকিয়ে যায়। তাই স্ক্রিন সংক্রান্ত কাজ করার সময় ঘনঘন চোখের পলক ফেলতে হবে। কেবল স্ক্রিন নয়, পলক ফেলার হার কমাতে পারে এমন যেকোনো কাজের ক্ষেত্রেও পরামর্শটি প্রযোজ্য।
সানগ্লাস পরুন: সানগ্লাসের ব্যবহার কেবল গরমকালে সীমাবদ্ধ নয়, বরং শীতকালে এটার গুরুত্ব আরো বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠান্ডার দিনগুলোতে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি চোখের ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে। যারা সানগ্লাস ছাড়াই সূর্যালোকে বেশি সময় কাটান, তাদের চোখে ছানি ও ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়া সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে চোখের পাতাও স্কিন ক্যানসারের ঝুঁকিতে থাকে। চোখকে প্রায় ১০০ শতাংশ সুরক্ষা দিতে ইউভি ৪০০ প্রটেকশনের সানগ্লাস পরুন। শীতে বাইরে সানগ্লাস ব্যবহার করলে বাতাসের শুষ্ক প্রভাব থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।
ডায়েটে ওমেগা ৩ রাখুন: গবেষণা বলছে, ওমেগা ৩ সমৃদ্ধ খাবার খেয়েও শুষ্ক চোখে স্বস্তি আনা যায়। ওমেগা ৩ চোখের মেইবোমিয়ান গ্ল্যান্ডের কার্যক্রম উন্নত করে, এর ফলে শুষ্ক চোখের অস্বস্তি কমে। ওমেগা ৩ সমৃদ্ধ খাবার চোখ শুকিয়ে যাওয়ার প্রবণতাও কমায়।
চোখকে আদ্র রাখুন: নারকেল তেল চোখ আর্দ্র রাখে, জ্বালা-পোড়াভাব কমায়। পরিষ্কার তুলায় নারকেল তেল দিয়ে চোখের ওপর ১৫ মিনিটের জন্য রাখতে পারেন। কিংবা হালকা গরম পানিতে পরিষ্কার কাপড়ের টুকরা ডুবিয়ে নেওয়ার পর সেটি নিংড়ে নিয়ে চোখের ওপর পাঁচ মিনিট রাখুন। এরপর আঙুলের হালকা চাপে চোখের ওপরের ও নিচের পাতায় কাপড়টা মালিশ করুন।
তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন