ঢাকা ০৯:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধের জন্য নয়, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যঃ প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ফুটেজ

অনলাইন রিপোর্ট॥

নবীন সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তোমাদের মনে রাখতে হবে, তোমরা এ দেশের সন্তান, জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই তোমাদের সবাইকে সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে। সুযোগ্য নেতৃত্ব, সার্বিক দিক-নির্দেশনা, পেশাদারিত্ব, দেশপ্রেম ও আন্তরিকতার মাধ্যমে তোমাদের দেশের সেবা করে যেতে হবে। দেশপ্রেমের মন্ত্রে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাই তোমাদের পেশাগত জীবনের প্রধান ব্রত।’

রোববার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ‘৮৩তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্স’-এর কমিশন প্রাপ্ত নবীন সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০২২’ পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধের জন্য নয়, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। বাংলাদেশ যুদ্ধ নয়, শান্তিতে বিশ্বাসী। সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী ও আধুনিকায়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান সরকার। ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বিজয় অর্জন করে স্বাধীন হয়েছে আমাদের দেশ। আর এই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির পিতা স্বাধীনতার পর দেশ গঠনের দায়িত্ব নেন, ওই সময় তার একটাই লক্ষ্য ছিল আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে সশস্ত্র বাহিনীকে পেশাদার ও শক্তিশালী বাহিনীতে গড়ে তোলা।

দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নবীন সেনা কর্মকর্তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের দিনটি আপনাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ প্রশিক্ষণের পর কাঙ্ক্ষিত কমিশনপ্রাপ্তির মাধ্যমে আপনারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন গর্বিত অফিসার হিসেবে দায়িত্ব নেবেন। আজ এই শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশমাতৃকার মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার যে পবিত্র দায়িত্ব অর্পিত হলো, তা যথাযথভাবে পালন করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’

বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেটদের উদ্দেশে বলেছিলেন ‘আমি তোমাদের জাতির পিতা হিসেবে আদেশ দিচ্ছি, তোমরা সৎ পথে থেকো, মাতৃভূমিকে ভালোবেসো। ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াবা, গুরুজনকে মেনো, শৃঙ্খলা রেখো, তা হলে জীবনে মানুষ হতে পারবা। ’ আমি আশা করি, নতুন ক্যাডেটরা এই কথা মনে রেখে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।”

বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় সেনা সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে সরকার প্রধান বলেন, ‘দুর্যোগ, দুর্বিপাক সব ক্ষেত্রেই আমাদের সেনাবাহিনী যথাযথ ভূমিকা পালন করে। আমরা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ফোর্সেস গোল বাস্তবায়ন করেছি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য স্থির করে আমাদের সুবর্ণজয়ন্তী ২০২১ সাল উদযাপন করেছি। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করেছি। আমাদের সৌভাগ্য ২০২১ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।’

সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের আজকের নবীন অফিসাররা হবেন ২০৪১-এর সৈনিক। তারা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলবেন। লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে যাবেন, সেটিই আমরা চাই।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধের জন্য নয়, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যঃ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৩:৫৩:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২২

অনলাইন রিপোর্ট॥

নবীন সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তোমাদের মনে রাখতে হবে, তোমরা এ দেশের সন্তান, জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই তোমাদের সবাইকে সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে। সুযোগ্য নেতৃত্ব, সার্বিক দিক-নির্দেশনা, পেশাদারিত্ব, দেশপ্রেম ও আন্তরিকতার মাধ্যমে তোমাদের দেশের সেবা করে যেতে হবে। দেশপ্রেমের মন্ত্রে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাই তোমাদের পেশাগত জীবনের প্রধান ব্রত।’

রোববার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ‘৮৩তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্স’-এর কমিশন প্রাপ্ত নবীন সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০২২’ পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধের জন্য নয়, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। বাংলাদেশ যুদ্ধ নয়, শান্তিতে বিশ্বাসী। সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী ও আধুনিকায়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান সরকার। ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বিজয় অর্জন করে স্বাধীন হয়েছে আমাদের দেশ। আর এই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির পিতা স্বাধীনতার পর দেশ গঠনের দায়িত্ব নেন, ওই সময় তার একটাই লক্ষ্য ছিল আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে সশস্ত্র বাহিনীকে পেশাদার ও শক্তিশালী বাহিনীতে গড়ে তোলা।

দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নবীন সেনা কর্মকর্তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের দিনটি আপনাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ প্রশিক্ষণের পর কাঙ্ক্ষিত কমিশনপ্রাপ্তির মাধ্যমে আপনারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন গর্বিত অফিসার হিসেবে দায়িত্ব নেবেন। আজ এই শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশমাতৃকার মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার যে পবিত্র দায়িত্ব অর্পিত হলো, তা যথাযথভাবে পালন করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’

বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেটদের উদ্দেশে বলেছিলেন ‘আমি তোমাদের জাতির পিতা হিসেবে আদেশ দিচ্ছি, তোমরা সৎ পথে থেকো, মাতৃভূমিকে ভালোবেসো। ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াবা, গুরুজনকে মেনো, শৃঙ্খলা রেখো, তা হলে জীবনে মানুষ হতে পারবা। ’ আমি আশা করি, নতুন ক্যাডেটরা এই কথা মনে রেখে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।”

বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় সেনা সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে সরকার প্রধান বলেন, ‘দুর্যোগ, দুর্বিপাক সব ক্ষেত্রেই আমাদের সেনাবাহিনী যথাযথ ভূমিকা পালন করে। আমরা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ফোর্সেস গোল বাস্তবায়ন করেছি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য স্থির করে আমাদের সুবর্ণজয়ন্তী ২০২১ সাল উদযাপন করেছি। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করেছি। আমাদের সৌভাগ্য ২০২১ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।’

সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের আজকের নবীন অফিসাররা হবেন ২০৪১-এর সৈনিক। তারা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলবেন। লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে যাবেন, সেটিই আমরা চাই।’